সন্ত্রাসমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে দরকার একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য, নিরপেক্ষ গবেষণা এবং সন্ত্রাসবাদের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ, যা হবে দীর্ঘায়িত, প্রাতিষ্ঠানিক এবং সম্ভাব্য সকল মতাদর্শের উপর ভিত্তি করে।
কিন্তু সন্ত্রাসবাদের উপর যেকোন নিরপেক্ষ গবেষণা ও বিশ্লেষণের জন্য তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক, উভয় ধারার সম্পৃক্ত মিশ্রণ কাম্য। এ কারণেই, সন্ত্রাসবাদ নিয়ে বাংলাদেশের পুর্ব অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও, অন্যান্য দেশ যারা এ বিষয়ে কার্যকর নীতি নির্ধারণ করতে পেরেছে তাদের চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছে।
এ প্রেক্ষিতে সিটিটিসি ও সিজিএস-এর যৌথ উদ্যোগ কিছুটা ব্যতিক্রম, বিশেষ করে, দুটি প্রতিষ্ঠানের তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক ধারার সম্মিলন করার প্রয়াসের দিক থেকে। যদিও এ প্রয়াস সন্ত্রাসবাদ প্রতিহত করার জন্য প্রয়োজনীয় সব সমাধান দিতে পারবে না তবে আশা করা যায়, এর মাধ্যমে সামাজিক ও নাগরিক পরিসরে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা করার জন্য অনুকুল পরিবেশ ও সচেতনতা সৃষ্টি হবে।
এটি অবশ্যই বাংলাদেশে সন্ত্রাসমুক্ত জীবন গড়ে তোলা এবং টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে পাথেয় হিসেবে বিবেচিত হবে।
দ্বিতীয় খণ্ডে প্রত্যাবাসন, সামাজিক সম্পৃক্ততা এবং সন্ত্রাসবাদ প্রতিহত করতে কাউন্টার টেরোরিজম ফোর্সের কী কী করা দরকার তার ওপর জোর দেয়া হয়েছে।
এই তিনটি বিষয়ের ওপর আলোচনা করতে সবার আগে সামনে আসে ‘মানব মনের অবস্থা’ বা স্টেট অব মাইন্ড; কী কারণে নিজের, রাষ্ট্রের এবং সমাজের ধংসাত্ত্বক পরিণতির ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও সে বিশ্বাস বা ভীতি অথবা দুটির দ্বারাই প্রভাবিত হয়ে সহিংসতায় লিপ্ত হয়।
ইউনেস্কো সনদের মুখবন্ধে উল্লেখ আছে- যেহেতু মানব মনেই যুদ্ধের বীজ বপন হয়, তাই মানব মনেই শান্তির বীজ বপন করতে হবে। সহিংসতা নির্মুলের ক্ষেত্রে ‘মানব মন’-এর ওপর জোর দেয়া খুবই জরুরি, কিন্তু এই মানব মনই আধুনিকতার ব্যাপক প্রসারের সাথে সাথে সহিংসতা পুনরুৎপাদনের ক্ষেত্রে অবদান রাখছে।
আশা করা যায়, দুই খণ্ডের এই বইটি দেশ ও বিদেশের উৎসাহী পাঠকদের মাঝে নতুন ধারণা, আলোচনা ও যুক্তি-তর্কের জন্ম দেবে। সমসাময়িক সন্ত্রাসবাদের মত একটি বহুমুখী সমস্যা শুধুমাত্র সকল পর্যায়ের মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই প্রতিহত করা যাবে।
সূচি: ১ম খণ্ড: ১. উগ্রবাদ থেকে জঙ্গিবাদে ধাবিত হতে পারে এমন সংবেদনশীল গোষ্ঠী সমূহ চিহ্নিতকরণ: আমেনা মহসিন এফ. এম. আরাফাত ২. তথাকথিত জিহাদী ন্যারেটিভের বিশ্লেষণ এবং সঠিক ব্যাখ্যা প্রণয়ন ইমতিয়াজ আহমেদ নাজমুল আরিফীন ৩. গণমাধ্যম ও জঙ্গিবাদের মিথজীবী সম্পর্ক: বাংলাদেশ পর্যালোচনা: শবনম আযীম ৪. ইন্টারনেট ভিত্তিক উগ্রপন্থীবাদ নিয়ন্ত্রণের কৌশল ও পরিকল্পনাসমূহ: মোহাম্মদ আতিক রহমান
২য় খন্ড ৫. বাংলাদেশে সহিংস উগ্রবাদী অপরাধীর পুনর্বাসন ও সামাজিক পুনরেকত্রীকরণের জন্য একটি কৌশলপত্র: এ এস এম আলী আশরাফ ৬. অতীতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের পুনর্বাসন এবং সন্ত্রাসবাদ দমনে তাদের ভূমিকা: নিলয় রঞ্জন বিশ্বাস ৭. সহিংস উগ্রবাদ প্রতিহত করতে জনগণ, সমাজ ও স¤প্রদায়ের সপৃক্তকরণ: মোঃ তৌহিদুল ইসলাম ৮. কাউন্টার টেররিজম ফোর্স (সিটিএফ) এর চাহিদা মূল্যায়ন: মোহাম্মদ আতিক রহমান
Dr Imtiaz Ahmed is Professor of International Relations and Director, Centre for Genocide Studies at the University of Dhaka. He is also currently Visiting Professor at Sagesse University, Beirut, Lebanon. He has authored, co-authored, and edited 33 books and nine monographs. Dr Ahmed heads several national and international projects and published more than 120 research papers and scholarly articles in leading journals and edited volumes. His recent publications are the following books: Women, Veiling and Politics: The South Asian Conundrum, edited (Dhaka: The University Press Limited, 2020); Civil Society, State & Democratic Futures in Bangladesh (Dhaka: Prothoma Prokashan, 2020); COVID-19: the otherside of living through the pandemic, edited (Dhaka: Pathak Shamabesh, 2021); and Rights, Rivers, and the Quest for Water Commons: The Case of Bangladesh (Berlin: Springer, 2021).