জগদীশচন্দ্র আধুনিক ভারতীয় বিজ্ঞানের আলোর উৎস। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন- 'আমার বন্ধুর মধ্যে আলো দেখেছিলাম। খাঁদের জীবন ও কর্ম চিরকাল বড়ো হবার প্রেরণা জোগায় তাঁদের মধ্যে জগদীশচন্দ্র 'একমেবাদ্বিতীয়ম্'।
ভারতের বিজ্ঞানতরীর প্রথম কর্ণধার হলেন আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু। জগদীশচন্দ্র পৃথিবীতে প্রথম বেতার সঙ্কেতের স্রষ্টা, মার্কনি নয়, জগদীশচন্দ্রই হলেন প্রথম আবিষ্কারক- বিজ্ঞানজগৎ আজ নির্দ্বিধায় তা স্বীকার করে নিয়েছে।
জগদীশচন্দ্র মনে করতেন, সত্যের প্রতিষ্ঠা হয়। বাধাবিপত্তির মধ্য দিয়ে। তিনি তাঁর প্রবন্ধ মরণ ও করণ-এ লিখেছেন, 'বুঝিতে পারিয়াছি, সত্যের সম্যক প্রতিষ্ঠা প্রতিকূলতার সাহায্যেই হয়, আর আনুকূল্যের প্রশ্রয়ে সত্যের দুর্বলতা ঘটে। জগদীশচন্দ্র একসঙ্গে পদার্থবিদ্যা ও জীবতত্ত্ববিদ্যার জটিল গবেষণাগুলি সমান পারদর্শিতার সঙ্গে চালিয়ে গেছেন।
ডিটেকটরের প্রথম কাজ করতে গিয়েই তিনি লক্ষ করেন, দীর্ঘক্ষণ কাজ করার পর জড়ের মধ্যেও জীবের মতো ক্লান্তি বা‘ফেটিগ’ এসে যায়। এই চেতনা থেকেই জৈব ও অজৈব পদার্থের মধ্যে মিল খোঁজার চিন্তা তাঁর মনে উদয় হয়। এই চিন্তার পরিণতিতে সৃষ্টি হয় ‘প্ল্যান্ট ফিজিওলজি’– সম্পূর্ণ নতুন এক দিগন্ত ।
বিজ্ঞানকে সাহিত্যের সৌন্দর্য দিয়ে উপস্থাপনা করার ক্ষেত্রে জগদীশচন্দ্র প্রসঙ্গে বলা যায়— বিজ্ঞানী ও কবি একই অরূপের সন্ধানী। তাঁর লেখা অব্যক্ত বইতে থাকা প্রবন্ধগুলি এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। বিজ্ঞানী ও কবি উভয়েই এই অরূপের সন্ধান করে, ‘প্রভেদ এই কবি পথের কথা ভাবেন না, বৈজ্ঞানিক পথটাকে উপেক্ষা করেন না। পদার্থবিদ ড. ঘোড়ই বিজ্ঞানাচার্যের জীবন ও কর্মকে সর্বজনগ্রাহ্য করে উপস্থাপনা করেছেন....