নাঈম আহম্মেদ। বরিশালের ঐতিহ্যবাহী উপজেলা উজিরপুরের একটি গ্রামে জন্ম। সেখানে বড় হলেও ছেলেবেলা কাটে এই ব্যস্ত শহরে। যখন কিছুটা বেড়ে ওঠা তখন গ্রামিন আবেশ পেতে বরিশালে থাকা হয় কয়েক বছর। তখন থেকেই বই পড়া ও লেখালেখির প্রতি অন্যরকম একটা টান। শুরু করেন টুকটাক গল্প ও কবিতা লেখা। একপর্যায়ে ২০১৬ সাল থেকে অতপ্রতভাবে সাহিত্যের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়েছেন লেখক। তারাই ধারাবাহিকতায় ২০২০-২২ এর মধ্যে সম্পাদনা করেন তিনটি কাব্যগ্রন্থ। এবং শূন্যতার শোকসভা তার একক উপন্যাস। লেখক শিক্ষাজীবন শহর এবং গ্রাম উভয় স্থানেই কাটে। বর্তমানে তিনি ঢাকায় একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর চলমান অবস্থায় রয়েছেন। এবং পেশায় তিনি একটি চিকিৎসা ভিত্তিক স্কুলের শিক্ষকতায় নিয়জিত রেখেছেন নিজেকে। শূন্যতার শোকসভা সম্পর্কে- "শূন্যতার শোকসভা" এটা একটা মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা যুবকের জয়-পরাজয়ের আত্মকাহিনী। একটা যুবক কিভাবে পারিবারিক দায়িত্ববোধ ও সামাজের নির্বোধতার মধ্যো দিয়ে নিজেকে টিকিয়ে রাখে তারই গল্প। কিছু রঙিন স্বপ্ন নিয়ে পথ চলা শুরু হয়েছিল এক যুবকের কিন্তু রঙিন স্বপ্নগুলো আর রঙিন রইলো না। কালো মেঘে ঢেকে গেলো সবকিছু। শূন্যতার আবাস তৈরি হলো তাকে ঘিরে। পরিবারের কর্তা ছোট একটি বেসরকারি অফিসের একজন নিম্নস্ত কর্মচারী মাত্র। তায় আয়েই চলতো ছোট্ট সংসার। ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা ও পরিবারের চার সদস্যের ভরণপোষণ কোনরকম হয়ে যেত এতেই। এই পরিবার থেকেই উঠে আসে শূন্যতার শোকসভা উপন্যাসের মূল চরিত্র। উঠে আসে যুবক। পড়াশোনার তাগিদে গ্রাম ছেড়ে পাড়ি জমাতে হয় শহরে। শহরের নতুন জজ জায়গা, নতুন পরিবেশে, সব অপরিচিত মুখ। আস্তে আস্তে নিজেকে মানিয়ে নিতে লাগলো যুবক। গ্রামে আছে এখন বাবা মা আর ছোট বোন। বোন যুবকের থেকে বছর দুয়েক ছোট। এভাবেই চলছিলো তাদের জীবন। হঠাৎ একদিন উড়ে আসা শিমুল ফুলের মতো যুবকের জীবনে প্রেম এলো। হলো জীবনকে রঙিন করে নতুন মানুষের আগমন। এই আগমন ছিলো তার কাছে স্বপ্নের মতো। কারন তার জীবনে এর আগে কখনো প্রেম আসেনি। পায়নি নতুন কারো পরশ। খুবই সুন্দর হাসিখুশিতে দিন কাটছিলো তার। কিন্তু এই হাসিটা আর স্থায়ী হলো না। প্রেমিকার ভাই ও বাবা অন্যত্র বিয়ে ঠিক করেছে তার। ছেলে অনেক বড় চাকরি করে যেখানে গল্পের যুবক নিতান্তই বেকার। সবে স্নাতক শেষ করেছে। এরই মধ্যে যুবকের বোনের বিয়ে ঠিক হয় এবং শর্ত থাকে মোটা অংকের টাকা। যেই টাকা যোগার করতে হবে যুবককে। শত চেষ্টা ও বাঁধা বিপত্তি অতিক্রম করে টাকা ব্যবস্থা করে যুবক কিন্তু ততক্ষণে বিয়ে অসম্পূর্ণ রেখে চলে যায় পাত্রপক্ষ। পরিনতি হয় বোনের মৃত্যু। এই টানাপোড়েনের শোক কাটাতে প্রিয় মানুষটার কথা একদমই মাথায় ছিলো না তার।খোঁজ নিয়ে জানতে পারে একরকম বাধ্য হয়েই বিয়ে করে নেয় তার প্রেমিকা। দিনশেষে আজ সে শূন্য। একচোখে ক্যারিয়ার আর অন্য চোখে পরিবার দেখতে গিয়ে নিজের জন্য কিছুই রইলো না যুবকের। আজ তাকে ঘিরে শূন্যতার বাসা বেঁধেছে। তার চারিপাশে বসেছে "শূন্যতার শোকসভা" আর এই সভার প্রধান বক্তা যুবক।