একটা ঘিঞ্জি স্পেস দিয়া আপনি কোণঠাসা ফিলিং আনতে পারবেন, আবার বড় স্পেস দেখানোর মাধ্যমে একটা স্বাধীন স্বাধীন ফিল আনা যায়। কিন্তু, যখন আপনি একটা ঘিঞ্জি স্পেসের সাথে খোলা স্পেসের কন্ট্রাস্ট টানবেন, তখন আপনি ওই স্বাধীন স্পেসের কারণে কোণঠাসা ফিল করার ব্যাপারটা আনতে পারবেন। এই ট্যাকটিকটা ভিড়ের মধ্যেও মানুষের একাকিত্ব আর লোনলিনেসটারে ধরতে পারে। ইন ফ্যাক্ট আমার বানানো প্রত্যেকটা সিনেমায় আমি একটা জিনিস এচিভ করতে চাই, তা হইলো ফিল্মের প্রোটাগোনিস্টদের ক্যারেক্টার না, স্পেস হিসেবে কল্পনা করতে পারাটা। যদি স্পেসরেও ক্যারেক্টার বানায়া ফেলা যায়, মানে ধরেন স্ক্রিনের ছাদটারে যদি ক্যারেক্টার হিসেবে ভাবা যায়, তাইলে সেও একটা সাক্ষী। সেও দেখতেসে ওইখানে কি ঘটতেসে। অনেকটা ছাদের উপরে একটা ক্যামেরা ফিট করার মত–সে লাইফরে দেখতে আর রেকর্ড করতে পারবে।
আমি অস্বীকার করবো না যে ২০৪৬-এর ইন্সপিরেশন একটা পলিটিকাল ল্যাঙ্গুয়েজ হইতেই আসছে, কিন্তু ল্যাঙ্গুয়েজটারে আমি একটা ডিফরেন্ট কনটেক্সটে রাখসি: পলিটিক্স না, প্রেম। ১৯৯৬ সালে আমি হ্যাপি টুগেদার শুট করার জন্য অতদূর আর্জেন্টিনায় কেন গেলাম? আমি ডিনাই করবো না যে ওই যুগে হংকং আবার চায়নার অংশ হওয়া আর এর ভবিষ্যৎ নিয়া আমার নিজস্ব কিছু চিন্তা ছিল। কিন্তু আমার মনে হয় পলিটিকাল ইনফ্লুয়েন্স একজন মানুষের জীবনে অনেক লম্বা একটা ছায়া ফেলে। এর রিয়াল এফেক্ট আজকেই বোঝা যাবে না। সাথে সাথেই এর ইনফ্লুয়েন্সটা বোঝা যায় না।
একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ সময় কাটলে পর এই ইনফ্লুয়েন্সটা স্পষ্ট হয়। অবশ্যই হংকং আবার চায়নার অংশ হওয়া নিয়া সবাই অনেক চিন্তিত, ফলে সবাই অনেক পলিটিকালি সেন্সিটিভ হইয়া পড়সি। আমরা জোরালোভাবে চাই হংকং যেন না বদলায়, কিন্তু এইটা অসম্ভব কারণ গোটা দুনিয়াটাই বদলাইতেসে। যদি আপনে না বদলান, তাইলে আপনে পিছে পইড়া যাবেন, এইজন্য আপনারে বদলটা ফলো করতে হবে।
আমাদের সবার মধ্যেই একটা তাড়না থাকে ছোটবেলায় আমরা যা যা এক্সপেরিয়েন্স করসি তা আবার ক্রিয়েট করার...অ্যাশেজ অফ টাইমের আগে আমার সিনেমাগুলা ছিল খুবই ভারি। চাংকিং এক্সপ্রেস বানাইতে বানাইতে আমি অলরেডি খুব হালকা হইয়া উঠসিলাম। আপনি জানেন দুনিয়ার সমস্যাটা কই। মডার্ন সোসাইটিতে থাকলে অনিবার্যভাবেই আপনার এইগুলা ফেস করা লাগবে। আর দিনশেষে, নিজেরে সবসময় হাসি-খুশি রাখা ছাড়া আর কোনো উপায় নাই, যাতে একদম বিমর্ষ হইয়া না পড়ি। চাংকিং এক্সপ্রেস মুভিটা আপনারে শিখাবে কিভাবে নিজেরে "এন্টারটেইন" করা যায় – আপনি নিঃসঙ্গ, আপনি একলা থাকেন, কিন্তু জীবনে মজা করার অনেক উপায় আছে। একটা সময় আমি বিশ্বাস করতে শুরু করসিলাম আমার অতিরিক্ত গাম্ভীর্য আমার ইম্ম্যাচিউরিটি হইতেই আসছিলো। আর এখন আমি সবকিছু ছাইড়া দেয়া শিখসি।