ই হ দি না অবক্ষয়, অধঃপতন এবং পৃথিবীতে পরাজিত শক্তি হিসেবে মুসলিম উম্মাহর এই অনাকাঙ্ক্ষিত আত্মপ্রকাশের পেছনে আসলে নানামুখী ব্যাধির বেড়াজালে আক্রান্ত মানুষের ক্বলব-ই দায়ী। কলব যখনই অনাচার-পাপাচারে মত্ত হয়েছে, সরে এসেছে শাশ্বত দীনের চিরসত্য বিধান এবং প্রতিবিধানের চর্চা থেকে, চারোদিক থেকে আঁকড়ে ধরেছে ব্যর্থতা, গ্লানি এবং অবধারিত পরাজয়। উম্মাহর সেই কাঙ্ক্ষিত বিজয়ের পথে প্রতিবন্ধক সেসব আত্মিক ব্যাধিগুলো চিহ্নিত করেছেন সমকালের প্রখ্যাত দায়ী ডক্টর খালিদ আবু শাদি। মরণফাঁদ হয়ে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঘাপটি মেরে বসে থাকা সেসব ব্যধি থেকে কোন পথে মিলবে মুক্তি, কুরআন এবং হাদিসের চোখ দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন তিনি। আধুনিক পৃথিবীর চিন্তা এবং মানসিকতার সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ প্রতিস্থাপন করে তাঁর প্রদর্শিত একেকটি প্রতিকার দেখে বিস্মিত হতে হবে নিশ্চিত। কেননা আবু শাদি কুরআন-হাদীস এবং সালাফের অভিজ্ঞতালব্ধ জীবনাচার থেকে সুনিপুণ প্রক্রিয়ায় আমাদের সামনে যেভাবে উন্মোচন করেছেন হিদায়াতের রঙে সমুজ্জ্বল এক পথের, তা এ যাবত-কালের এক বিরল, বিস্ময়কর ও অকল্পনীয় নান্দনিক পরিক্রমাই বটে।
ড. খালিদ আবু শাদি খালিদ আবু শাদি মিসরের একজন প্রতিভাবান দায়ি ইলাল্লাহ। ১৯৭৩ সালের ১৮ মার্চ গারবিয়াহ প্রদেশের জিফতা নগরীতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা করেন কুয়েতে। তারপর মিসরের কায়রো ইউনিভার্সিটিতে ফার্মেসি ফ্যাকাল্টি থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। শৈশব থেকেই তিনি প্রখর মেধা ও অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। কর্মজীবনের একটি বড় সময় তিনি দাওয়াহর কাজে ব্যয় করেন। লেখালেখিকেই তিনি দাওয়াহর মাধ্যম হিসেবে বেছে নেন। তাঁর স্বতন্ত্র রচনাশৈলী আর হৃদয়গ্রাহী উপস্থাপনা সহজেই পাঠকদের নজর কাড়ে। মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার অদ্ভুত এক শক্তি আছে তাঁর কলমে। দাওয়াহ কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় একে একে তিনি উম্মাহকে উপহার দেন ১৪টিরও বেশি মূল্যবান গ্রন্থ। ‘ইয়ানাবিউর রাজা’, ‘মাআন নাসনাউল ফাজরাল কাদিম’, ‘সাফাকাতুন রাবিহা’, ‘লাইলি বাইনাল জান্নাতি ওয়ান নার’, ‘বি-আইয়ি কালবিন নালকাহ’ ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা। এ ছাড়াও বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে তাঁর অসংখ্য মূল্যবান প্রবন্ধ। কখনো বক্তৃতাকেও তিনি দাওয়াহর মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেছেন। তাঁর হৃদয়-নিংড়ানো আহ্বান অসংখ্য পথহারা তরুণকে দ্বীনের পথে উঠে আসার প্রেরণা জুগিয়েছে। আমরা প্রতিভাবান এই দায়ি ইলাল্লাহর দীর্ঘ কর্মময় জীবন কামনা করি।