হামিমার স্বামী হিমেল এসেছে ডাক্তার তরফদারের কাছে। মূল উদ্দেশ্য ডাক্তার তারফদারের পরামর্শ গ্রহণ করা। কারণ তার স্ত্রী মাঝে মাঝে ভয়ংকর স্বপ্ন দেখে। অজানা এক ব্যক্তি একজনের পর একজন মানুষকে খুন করছে। তার স্ত্রীর বিশ্বাস, তার সকল স্বপ্ন সত্য। ডাক্তার তরফদার প্রথমে বিষয়টিকে অবচেতন মনের কল্পনা ভাবলেও পরে অনুধাবন করেন বাস্তবতা আর স্বপ্নের মধ্যে সূ² যোগসূত্র আছে। সেই যোগসূত্র ধরে খুনির পরিচয় উদ্ঘাটন করতে এগিয়ে যেতে থাকেন তিনি। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। হামিমা যে বেরিয়ে গেছে ক্লিনিক থেকে। তাহলে কি সে খুনির ফাঁদে পা দিয়েছে! ধীরে ধীরে চোখ খুলল হামিমা, এতক্ষণ চোখ বাঁধা ছিল তার। চোখে আলো সয়ে আসতে সময় লাগল কিছুটা। আঁতকে উঠল সামনের মানুষটাকে দেখে। ভয়ংকর সেই সিরিয়াল কিলার যাকে সে স্বপ্নে দেখত! হাতে একটা ছুরি, চকচক করছে। এই ছুরি দিয়েই সে নির্মম নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে মানুষকে, টুকরো টুকরো করে শরীর। হামিমা বুঝতে পারল মহাবিপদে আছে সে। কারণ নির্জন এক কক্ষে বন্দি সে, কেউ জানে না এই কক্ষের সন্ধান! এজন্য চাইলেও তাকে উদ্ধার করতে পারবে না কেউ। একমাত্র পরিণতি মৃত্যু! ডাক্তার তরফদার কি শেষ পর্যন্ত রক্ষা করতে পেরেছিলেন হামিমাকে? আর কে ছিল ঐ সিরিয়াল কিলার? নাকি সবার অলক্ষে এখনো সে চালিয়ে যাচ্ছে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ!
লেখক মোশতাক আহমেদ এর জন্ম ১৯৭৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর, ফরিদপুর জেলায়। পেশায় একজন চাকুরিজীবী হওয়া সত্ত্বেও লেখালেখির প্রতি তাঁর আগ্রহ প্রচুর। এ পর্যন্ত সায়েন্স ফিকশন নিয়েই সবচেয়ে বেশি লিখেছেন। বাংলা সায়েন্স ফিকশন জগতে তার পোক্ত একটি অবস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও মোশতাক আহমেদ এর বই সমূহ ভৌতিক, প্যারাসাইকোলজি, মুক্তিযুদ্ধ, কিশোর ক্ল্যাসিক, ভ্রমণ ইত্যাদি জঁনরাতে বিভক্ত। যেকোনো একটি বিষয়ে সীমাবদ্ধ না থেকে তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখতেই পছন্দ করেন। মোশতাক আহমেদ এর বই সমগ্র সংখ্যায় পঞ্চাশ পেরিয়েছে। তাঁর প্রথম প্রকাশিত বই ছিল ‘জকি’। এটি একটি জীবনধর্মী উপন্যাস। ২০০৫ সালে এটি প্রকাশিত হয়। মোশতাক আহমেদ পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রথমে ফার্মেসি বিভাগে, পরে আইবিএতে। পরবর্তী সময়ে ইংল্যান্ডের লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপরাধবিজ্ঞান থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। পড়াশোনার খাতিরেই হোক বা কর্মজীবনের তাগিদেই হোক, ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অনেক ভ্রমণ করেছেন। সেসব ভ্রমণকাহিনীর আশ্রয়ে তাই ক্রমেই সমৃদ্ধ হয়েছে তাঁর লেখা ভ্রমণকাহিনীগুলোও। তাঁর সৃজনশীল কর্মকাণ্ড শুধু লেখালেখিতেই গণ্ডিবদ্ধ নয়। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাজারবাগের পুলিশ ও পাকিস্তানী হানাদারবাহিনীর মধ্যে একটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। সে ঘটনার ওপর ভিত্তি করে মোশতাক আহমেদ ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ’ নামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন। এটি ২০১৩ সালের মার্চ মাসে মুক্তি পায়। তাঁর পুরস্কারের ঝুলিতে এ পর্যন্ত রয়েছে ২০১৩ সালের কালি ও কলম সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৪ সালের ছোটদের মেলা সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৪ সালের কৃষ্ণকলি সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৫ সালের সিটি আনন্দ আলো পুরস্কার এবং সর্বশেষ সংযুক্তি হিসেবে সায়েন্স ফিকশন বিষয়ে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০১৭।