“আমি কে তা বললে আপনারা অবাক হবেন, আমি আসলে কেউ না। তবে হ্যাঁ আমাকে দেখলে সবাই মুগ্ধ হয়! ঐ যে মানুষের একটা প্রিয় বাক্য আছে না, "প্রথম দর্শনে প্রেম" অনেকটা সেই রকম। তবে এইসব দর্শন, চোরা স্পর্শ, লোভী ইচ্ছেতে আমার কিছুই যায় আসে না। এবার আমার গল্পটা বলি..." “লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশের অবৈধ পদ্ধতিটা 'গেইম' নামে পরিচিত। দালালদের মাধ্যমে দেড়-দুই লাখ টাকার চুক্তিতে যেতে হয়। সাগরপাড়ের কোন একটা জায়গায় অস্থায়ী ক্যাম্পে কিছুদিন থাকতে হয়। সুযোগ বুঝে দালালরা কোন একদিন নৌকায় উঠিয়ে দেয়। নৌকাগুলোতে সাধারণত ৭০-৮০ জনের মতো বসতে পারে কিন্তু গেইমের সময় দেড়শোর মতো অভিবাসন প্রত্যাশী স্বপ্নবাজ মানুষকে ঠেসে দেয়। নৌকা ভাসতে থাকে ভূমধ্যসাগরে। স্বপ্নপূরণের জন্যে শুধু পরিশ্রম আর সাহস নয়, এখানে নামতে হয় এক জীবন-মরণ খেলায়। এই গেইম অফ ডেথ পার হতে পারলেই স্বপ্ন সত্যি হয়ে ধরা দেয়।“ “একাকী বারান্দায় রকিং চেয়ারে বসে কেন জানি আজ সেই ছেলেটার জন্য বুকের মধ্যে ভীষণ শুন্যতা অনুভব করছে মায়া। দিগন্তের ওপারে যে দিগন্ত সেখানের মানুষগুলো কেমন থাকে খুব জানতে ইচ্ছে করে মায়ার।" “হৃদি এখনো পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারেনি কী ঘটছে। হৃদি আনমনেই গেস্টরুমের ভিতরে ঢুকলো। আলতো করে বিছানায় বসতে গিয়েই লাফিয়ে উঠলো। একি! বিছানাটা ভেজা কেনো? তাহলে কী ছোটমামা…" “রিমির মতো মারুফের আরো তিনজন প্রেমিকা ছিলো। একই সময়ে, একই শহর; লন্ডনে। তাদের এক একজন একেক রকমের মানুষ। কেউ পার্টি করতে পছন্দ করতো। কেউ বা ছিলো আটপৌরে, যেমন রিমি আর আরেকজন ছিলো ভীনদেশী। রিমি কখনো টেরও পায়নি মারুফ সামদানীর আসল চেহারা। তাদের তথাকথিত বিয়ের সাত মাস পরে যখন রিমি জানতে পারে মারুফের পার্টিবাজ গার্লফ্রেন্ড মনিকা প্রেগন্যান্ট, রিমি তখন দিশেহারা হয়ে যায়।“ “পিকনিক বাস্কেট থেকে খুব যত্ন করে স্ট্রবেরি জেলি, এগ পোডিং, চকলেট ফস কেকের বক্সটা নামাতে নামাতে মৃত্রিকা আমাকে আবারও একটু শাসন করে নিল, আজ সবকিছু আমি নিজের হাতে করব, তুমি একটুও হাত দিবে না মা, খুব লক্ষ্মী মেয়ের মতন চেয়ারটায় বসে থাকবে। চাইলে হেমাকটায় একটু গা এলিয়েও দিতে পার তোমার কবিতার প্রিয় বইটা সাথে নিয়ে। আমি একটু মুচকি হেসে আমার ব্যাগ থেকে গীতাঞ্জলিটা বের করতে করতে মেয়ের যত্নের পসরা দেখছি আর ভাবছি মেয়েটা দ্রুত বড় হয়ে যাচ্ছে।“ “কেয়ার ওয়ার্কার টিনার সাথে ২০২ নাম্বার রুমে ঢুকল আয়েশা। সুনসান নিরবতা ছোট্ট রুমটা জুড়ে। বিছানায় সাদা চাদরে ঢাকা মিসেস মারলিন। চাদর সরিয়ে বুকে স্টেথোস্কোপ রাখল, চোখে টর্চ, নিষ্প্রাণ মুখটার দিকে তাকিয়ে ধক করে উঠল মনটা, মনে হল এমনই কি ছিল তার মায়ের মুখ। এতো মুখ দেখে মৃত্যুর পর, মায়ের মুখটাই দেখা হলো না তো। “ রহস্য, রোমাঞ্চ,সাসপেন্স, সামাজিক,পারিবারিক ঘটনা, ভালোবাসা, প্রতিশোধ সহ সমসাময়িক নানান ঘটনা উঠে এসেছে এই বইয়ের এক একটি গল্পে। সব মিলিয়ে পুরো বইয়ের দুই মলাটে আবদ্ধ আছে মানুষের যাপিত জীবনের উপাখ্যান। প্রিয় পাঠক, আসুন আর একবার অবগাহন করি 'লেখকবন্ধু'দের সাথে তাদের ভালোবাসার বর্ণমালায় সাজানো সুনীল পারাবারে।