ভালোবাসার অর্ঘ্য
যেদিন আমার অন্ধবিশ্বাসকে গলা টিপে হত্যা করেছো সেদিন মেঘের বিদ্যুৎয়ের মতো প্রচণ্ড চিৎকারে কেঁপে ওঠেছিলো অন্তরাত্মা!
গুপ্তঘাতকের মতো তোমার অবিশ্বাসী মুখশ্রী
বিচ্ছেদের ভয়ংকর রূপে বারবার হানা দিচ্ছিলো আমার শহরে রাস্তার ল্যামপোস্টগুলো নিয়ন আলোর মতো বিবর্ণ বাহারে দৃশ্যপরিবর্তনের সময়টুকু চাইছিলো তবুও পরিবর্তনের মিছিলে হাঁটতে পারিনি আমি।
অন্ধকার নীরবে কাতরাচ্ছে!
বিমর্ষতার সেই চিত্র
আক্ষরিক অর্থে আমায় যেন ঠেলে দিচ্ছিলো
ভয়ানক মৃত্যুর দিকে!
কিন্তু অতন্দ্র প্রহরী হয়ে তৃষ্ণার্ত বুক পেতে আমায়
আগলে রাখে আগুনের বারুদ
। মৃত্যুর বৈতরণী থেকে ফিরে এসে প্রতিশোধ স্পৃহায়
তোমায় দেইনি অভিশাপ।
উত্তরের হিমেল হাওয়া আমার সম্মোহনী শক্তি দেখে হতবাক!
দুষ্টুমিষ্টি কথার ছলে নিঃশ্বাসের কাছে এসে বলে সমঝোতার কথা মেঘ আর পাহাড়ের সমঝোতায় একলা ঝিনুক সমুদ্র অসুখে তৃষিত বালুচরে ঢেউয়ের দোলায় হাত বাড়ায়।
অবিকল স্বপ্নের মতো উতলা তৃষ্ণাকে লুকিয়ে রেখে পৌনঃপুনিকতার চক্রে ক্রমাগত ঘুরতে থাকা প্রেমের আর্দ্র পরাণখানা
লজ্জার আড়ষ্টতা ভেঙ্গে যৌবনরসের সমস্ত জৌলুস দিয়ে পদ্ম—পরাগ মথিত আরতীর থালা সাজায়।
স্বলজ্জ স্বভাবে সেঁজুতি তখন নিভু নিভু!
সুঘ্রাণ ছড়ানো ধূপ ধোঁয়ার প্রখর উত্তাপে ঝলসে যাওয়া মেঘমন্দ্রিত সান্ধ্য চটুল বাতাসের কাঁধে ভর দিয়ে খুলে দেয় প্রণয়ের দরজা।
বুকের ধুকপুক উত্তাল তরঙ্গের মতো বেড়ে যায় পল অনুপলে উঁকি দেয় মাতাল বুনো ঠোঁট!
ছন্নছাড়া চুলের অনুশাসনে বাঁধা পরে মধুর লজ্জা!
তুলসীর জলঠোঁটে ভিজে যায় ভালোবাসার অর্ঘ্যে।
জলধির ভূতলে এমন ভালোবাসা জমা থাকলে
নির্দ্বিধায় কামনার জল টপকিয়ে লেখা যায় ভালোবাসার মহাকাব্য! পিপাসিত অনুভূতির ডাকে স্নিগ্ধ গাঙচিলের ডানায় বিশ্বাসের রঙতুলির ছোঁয়ায় আঁকা যায় প্রণয়কাব্যের প্রচ্ছদ।
দূর—দূরাগত গগনে বর্ণিল রামধনুর নিগূঢ় মমতার চাদরে বসে কাব্যের প্রণয় দেবতা
তবুও কি সীমন্তিনীর আকাশে অসম সম্পর্কের বিদ্রূপে তীর ছুড়বে আবার কখনো?
কতোবার? কতোভাবে!
হে ধোঁয়াশা মানব?
মান—অভিমানের চৌরঙ্গীতে বসে তুমি বুঝি একাই চেয়েছিলে? ভালোবাসার অর্ঘ্য ছুঁতে!
আমি চাইনি?