একদিন আসুন, মোড়ের দোকানে বসে চা—শিঙাড়া খাই। আগুন—গরম শিঙাড়া ভেঙে খাওয়ার মধ্যেও নিপাট বিস্ময় আছে, আনন্দ আছে। প্রথমে তাকে দু—আঙুলে ধরবেন। তারপর চার আঙুলে মাঝখানে ছিঁড়বেন। হাতের তালুতে নিলে পুড়ে যেতে পারে হাতের ভাগ্যরেখা, অর্ধেক আয়ুরেখা। আসুন কোনোদিন, দুজনে মিলে চা—শিঙাড়া খাই। আপনি যখন একটা—আগুন গরম শিঙাড়াকে ছিঁড়বেন মাঝখানে ধোঁয়ারূপী বাষ্প উঠবে এক ঝলক, রাঙিয়ে দেবে আপনার চোখের পাচিল। পিরিচে ছড়িয়ে রাখবেন তাকে। তারপর খুলে খুলে মুখে দিবেন, চায়ের ফাঁকে ফাঁকে। আলুর খোসা দেখে বিরক্তির কিছু নাই। আলুর খোসাও হজম হয়। ধরে নেন এইটাও শিঙাড়ার পেটের কারুকাজ, সলমা জরির নকশার মতো তাকেও একটা মরিচ আর একফালি পেঁয়াজের সঙ্গে মুখে দিন। জিভের তলায় তখনো ঘনীভূত গত রাত্রির চুম্বনের দাগ। আসুন, শিঙাড়ার ভিতর দেখাই তাপিত শহরতলির হর্ষবিষাদের আপ অ্যান্ড ডাউন। চায়ের কাপ ঘিরে উড়বে মাছি ৮৭ গোলাপচেরা রাতে আর মহাকাল। আর আপনি আমার ডান পাশ ঘেঁষে বসে হয়ে যাবেন কবিতার ‘ক’। চা—শিঙাড়ার পরে পাতা—মহাপাতা খাইয়ে আপনার ভিতর থেকে বের করে নেবো অর্ধেক কবিতার শুরু। বাকিটা আপনি উঠে গেলেই হবে। আসুন না একদিন তবে! সে আমার নিমন্ত্রণ অগ্রাহ্য করতে পারে না। একদিন চলেই আসেন। আমার মুখোমুখি বসেন। আমিই কথা শুরু করলাম, ‘জানেন তো, পাতাখোর দুই প্রকার। যথা যারা শুকনা মানে গাঁজাপাতা খায় আর যারা কাঁচা মানে কাঁঠালপাতা খায়। দুই প্রকারের মধ্যেই নেশার বিস্তার ব্যাপক। তবে ইহারের মধ্যে প্রথম প্রকার নির্বিষ। খাইয়া একসময় রানিক্ষেতে আক্রান্ত মুরগির মতো ঝিমায়। কিন্তু দ্বিতীয় প্রকারে মাথার চুল থেকে বিচির বাল পর্যন্ত প্রতিটা লোমকূপে বিষ, ঘেন্না আর বিদ্বেষ। এরা প্রত্যেকেই সারাক্ষণ দৃশ্য—অদৃশ্য চাপাতি নিয়া ঘুরে বেড়ায়। তেমন কারো খান্দানি ঘাড় পাইলেই কোপ দেয়। ‘আপনি আমাকে মুরগি বললেন?’ ‘হয় বললাম। এখন কী করবেন? পকেটে হাত দিয়া একটু আগে আমার টেবিল থেকে যেইটা চুরি করলেন ওইটা বাইর করেন’