এই বাসাটা রিচি ঠিক যেভাবে ফেলে গিয়েছিল, সেভাবেই রেখে দিয়েছে ফরহাদ। একটি আসবাবও এই ক’বছরে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরায়নি, প্রতিটি জিনিস রিচি যেখানে যেমন ছিল, সেখানেই আছে। চিরুনি ডেস্কের যে জায়গায় থাকত, সেখানেই রাখা হয় এখনো, রিচির শাড়িগুলো আলমারির যে তাকে থাকত সেখানেই আছে, সুদৃশ্য শোপিসগুলো যেখানে যেখানে সাজানোছিল, সেখান থেকেই নন্দন ছড়িয়ে যাচ্ছে এখনো। ফরহাদ কেবল গেরস্থালি সাফ-সুতরো করে রাখে, আর কোনো কিছুই সে এদিক-সেদিককরেনি। ব্যাপারটা এমন যে সবকিছু ঠিকঠাক সাক্ষ্য দিচ্ছে একটি পরিপাটি সংসারের ব্যাপারে, কেবল যে দুটো মানুষ সংসারটা করছিল, তাদের মধ্যে একজন নেই হয়ে গেছে! এই ঘরের প্রতিটি কোণায়রিচির সাথে তার সাংসারিক স্মৃতি, সেসব স্মৃতি রোমন্থন করে অনেকটা সময় কাটিয়ে দিতে পারে ফরহাদ,শুরুতে অবশ্য বড্ড পোড়াতো এসব, এখন কেমন রয়েসয়ে গেছে। যেন এইসব স্মৃতি নিয়ে একা বেঁচে থাকাটাই অতি স্বাভাবিক ব্যাপার, এমন একটা অনুভব নিয়ে ফরহাদের দিন কেটে যাচ্ছে। কিন্তু খেয়া! জীবনের এই হেমন্তকালে আসন্ন শীতের অপেক্ষায় যখন প্রহর গুনছেফরহাদ, তখন কোথা থেকে সাত নম্বর সংকেত পড়া ঝড়ের মতো এই মেয়েটা জীবনটা ওলট-পালট করতে চলে এসেছে! একে এভাবে আসতে দেওয়া কি ঠিক হবে?
জান্নাতুন নুর দিশা ১৯৯২ সালের ৮ জুন চট্টগ্রাম জেলায় জন্মগ্রহণ করেছেন। তিনি পিতা সৈয়দ খালেদ হায়াত ও মাতা হোসনে জাহানের দ্বিতীয় সন্তান। তিনি রসায়নে স্নাতক(সম্মান) এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করার পর বর্তমানে শিক্ষকতা পেশায় রয়েছেন এবং কর্মরত আছেন একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে।