সন্ধি মানে চুক্তি। চুক্তি হয় একাধিক পক্ষের মধ্যে এবং কতগুলো শর্তের ভিত্তিতে। প্রতিটি পক্ষ চায় শর্তগুলো নিজেদের মতো করে সাজাতে। ক্ষমতা আর কথার মারপ্যাচে প্রতিপক্ষকে নিজেদের তৈরী শর্তে রাজি করাতে। এমনই একটি সন্ধি হয় ৬২৮ খ্রিস্টাব্দে মক্কার অদূরে হুদায়বিয়ার প্রান্তরে। সন্ধিতে পক্ষ ছিলো দুটি। এক পক্ষে মক্কার মোনাফেক ও মোশরেকরা অন্যপক্ষে মদীনার আনসার ও মোহাজেরগণ। সন্ধির শর্তাবলী নির্ধারণের পূর্বেই ওরা মুসলিম প্রতিনিধিদেরকে অপমান—অপদস্ত করল। ওসমান (রা.)কে তো রীতিমতো বন্দি করে রাখলো। সন্ধিপত্র লিখতে বসে ওরা বললÑ এবার তোমরা মক্কায় প্রবেশ করতে পারবে না। এখান থেকেই ফিরে যাবে মদীনায়। আগামী বছর আসতে পারবে। তাও তিনদিনের জন্য। নবী করীম (সা.) তাতেই রাজী হলেন। ওরা বললÑ মক্কার কোনো লোক মদীনায় গিয়ে আশ্রয় নিলে তোমরা তাকে ফিরিয়ে দিবে। কিন্তু মদীনার কোনো লোক মক্কায় এসে আশ্রয় চাইলে আমরা তাকে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য নই। এবারেও নবী করিম (সা.) মাথা নেড়ে সম্মতি জানালেন। এমনি একতরফা ধাঁচেই তৈরি হলো সন্ধিপত্র। আর তাতেই ক্ষুব্ধ হলেন মদীনার আনসার— মোহাজেরগণ। সন্ধিপত্রের এমন শর্তাবলীর বিরোধিতা করেন ওমর (রা.)—এর মতো প্রথম সারির ঘনিষ্ঠ সাহাবিগণ। নবী করিম (সা.)—এর সাথে সাহাবীগণের এই যে মতের বিরোধিতা ও চিন্তার তারতম্য এর ব্যাখ্যা পাওয়া যাবে এ পুস্তকে। আরো মিলবে এ জাতীয় অনেক প্রশ্নের জবাব।