ভ্রমণকাহিনি সাহিত্যের জনপ্রিয় একটি ধারা। ভ্রমণকাহিনি পাঠকদের একস্থানে রেখে সমগ্র বিশ্ব ঘুরিয়ে আনে; পাঠককে বিভিন্ন দেশ ও বিখ্যাত নগরীগুলোর ইতিহাস-ঐতিহ্য, রাজা-বাদশাহ ও তাদের রাজপ্রাসাদ-শাসন পদ্ধতি, বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থাপনা, নানা দেশের ভৌগেলিক অবস্থা, পর্বত-নদী-জলাভূমি, পরিবেশ-প্রতিবেশ, সম্পদ, সামাজিক-সাংস্কৃতিক দিক, সভ্যতায় তাদের অবদান এবং অনেক অজানা বিষয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়, যেসব স্থানে অধিকাংশ মানুষের পক্ষে যাওয়া বা বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করা সম্ভব হয় না। তাছাড়া অনেকে ভ্রমণ করলেও তারা তাদের অভিজ্ঞতা লিখে যান না। সেদিক থেকে লেখক-সাংবাদিক হাবিব রহমান ব্যতিক্রম। তিনি যে স্থানগুলো ভ্রমণ করেছেন, সেসব স্থানে তাঁর অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন, যা বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর লেখাগুলোর একটি অংশ ইতোমধ্যে “ঘুরে দেখা ইউরোপ” নামে একটি গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে। তাঁর ভ্রমণের আরেকটি অংশ “আফ্রিকার দেশে দেশে” নামে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। আশা করি, তাঁর প্রথম ভ্রমণ কাহিনির মতো এটিও ভ্রমণ-পিপাসু ও আগ্রহী পাঠকরা সাদরে গ্রহণ করবেন। হাবিব রহমান তাঁর নিজের ভ্রমণ তৃষ্ণা পূরণ করার পাশাপাশি ভ্রমণবিলাসীদের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন বলে তাঁর ভ্রমণ বৃত্তান্ত গ্রন্থাকারে উপস্থাপন করছেন।
হাবিব আর রহমান-এর জন্ম যশোর জেলার চৌগাছা থানার জগদীশপুর গ্রামে, ১৯৫৪ সালে। উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন খুলনার দৌলতপুর সরকারি ব্রজলাল কলেজ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। পিএইচ.ডি গবেষণা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ব্রজলাল কলেজে প্রায় পনেরো বছর পড়িয়ে ১৯৯৬ সালের আগস্টে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। বর্তমানে সেখানে বাংলা বিভাগে প্রফেসর পদে কর্মরত। আধুনিক বাংলার সামাজিক ইতিহাস ও চিন্তাশীল বাঙালি মুসলমান লেখক-বুদ্ধিজীবীদের জীবন ও কর্মকাণ্ডের তিনি তন্নিষ্ঠ গবেষক। সাহিত্যশিল্পের তাত্ত্বিক দিক সম্পর্কেও তাঁর যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। হাবির আর রহমান লেখেন কম। কিন্তু তাঁর প্রতিটি লেখায় শ্রমশীলতা ও সযত্ন পরিচর্যা স্বয়ংপ্রকাশ। দুই বাংলার প্রাজ্ঞজনদের কাছে তিনি সমাদৃত গবেষক।