১. লিডিয়া ডেভিসের ইন্টারভিউয়ের ভূমিকা লিখতে হালকা ভয় লাগে; ঠিক ভয়ও না, অস্বস্তি লাগে। ভনিতা কইরা বা অতি মুগ্ধতা থেকে এই কথা বলতেছি না। একটা প্যারাগ্রাফ বা বাক্য বেহুদা লিখতে রাজি না এমন অনেক লেখক আছেন দুনিয়ায়। ডেভিস এমন একজন লেখক যিনি অপ্রয়োজনীয় একটা শব্দ তো দূরের কথা, একটা কমা পর্যন্ত রাখতে চান না। এই কমা-টমা নিয়া বাড়াবাড়ি ( 'কমা-কমি'ও বলা যায়) আপনার কাছে যদি গিমিক মনে হয়, আপনার হাতের বইটার শেষের ২টা পৃষ্ঠা পড়ে আসেন। [ আসেন, ঘুরে আসেন৷ মাত্র ৫-৬ মিনিটের মামলা। আমি ভূমিকায়, ঠিক এইখানে, আপনার জন্যে ওয়েট করতেছি।] তো, ছোট্ট একটা কমাও লিডিয়া ডেভিসের জন্যে এতো গুরুত্বপূর্ণ। বাংলায় শহীদুল জহির জাস্ট একটা কমার জন্যে একটা গল্প নতুুুন করে বইয়ে ছাপাইছিলেন। লিডিয়া ডেভিস এই ধারার লেখক, কিন্তু জহিরের চাইতেও বেশি চুজি, খুতখুতে। তার ইন্টারভিউয়ের ভূমিকা লেখতে একটু অস্বস্তিতে পড়া স্বাভাবিক। বলেন, ঠিক কিনা? ২. : ডেভিসের সাহিত্যের টাইপ কেমন? : ডেভিসের সাহিত্য নির্দিষ্ট টাইপে ফালানো টাফ। আম্রিকান লিটারেরি ফিকশনের সবচেয়ে বেপরোয়া, নিরীক্ষা-প্রধান ধারার অন্যতম প্রধান কথাশিল্পী ডেভিস। এমি হেম্পেল, লরি মুর, হেলেন সিম্পসন, জন শেফার্ড, গ্যারি লুটস, লুসি করিন, কেলি লিংক, স্যাম লিপসাইটসহ অনেক নামী লেখক ডেভিসের স্টাইল আর নিরীক্ষা অনুসরণে গল্প লিখছেন, আরও অনেকে লিখতেছেন। ডেভিসের গল্প পড়লে আপনার মনে হইতে পারে, এইভাবেও গল্প লেখা যায়? গল্প হইতে পারে? অদ্ভুত তো! যদিও বড় সাইজের গল্প বা উপন্যাসও তার আছে, বেশিরভাগ গল্প খুব ছোট, এমনকি দুই একটা এক বাক্যেও। তার গল্প প্রায়ই প্লটলেস, কিন্তু বোরিং না। ডেভিসের লেখা উইটি, চমকপ্রদ এবং সংক্ষিপ্ত। ফানি তবে লল ফানি না। এক ধরণের বুদ্ধির দীপ্তি সবসময় তার লেখায় খেলা করে। তবে কি ডেভিস কব্জির সার্কাস দেখান খালি? ভাষার জাগলারি? মজার ব্যাপার হইলো, ঠিক তেমনটাও বলা যায় না। যদিও ভাষায় তার দখল অসামান্য, ভাষা বা স্টোরিটেলিং-এ গিমিক দেখানোর চেষ্টা তার নাই।