তো, দুই বন্ধু আলাপ করতেছিল আর বারান্দায় বইসা বৃষ্টি দেখতেছিল। এক বন্ধু কইল দোস্ত প্রতিবছর রেইনি সিজন আসলে আমার কালিদাসের কথা মনে পড়ে। দ্বিতীয় বন্ধু কইল দোস্ত তোমার মনে এত কষ্ট কিসের যে বৃষ্টি দেইখা কবি কালিদাসের কথা মনে আসে! তখন প্রথম বন্ধু বলে দত্ত পাড়ার কালিদাস যে আমার ছাতাটা একবার বৃষ্টির দিনে নিছিল আর ফেরত দেয় নাই। সো, কবিতা লেখার সাথে একটা কষ্ট-কষ্ট ভাব জড়াইয়া থাকে। কেউ কবিতা লেখে এইটা শুইনা মনে হয়--আহা লোকটা কষ্ট পাইয়া কবি হয়া গেল! প্রেমে বিফল, সংসারে অশান্তি, স্বামি-স্ত্রীতে অমিল, বেকারত্ব জনিত দৈন্যদশা এগুলার কারণেই যে জীবনানন্দ-নজরুল হইতে হইছে ঠিক এমনও না। ফানি কবিতা পড়লেই বুঝবেন, কবিতা তার দায়িত্ব পালনে অনীহা করে না, কিন্তু তবুও ফানি কবিতা বইলা তারে রম্য রচনা যে বলা হয় না তেমনও না। একবার এক কোয়াক ডাক্তার মে বি পায়ের ব্যাথা নিয়া আসা এক পেশেন্টের পায়ে স্টেথোস্কোপ দিয়া শব্দ শুইনা ট্রিটমেন্ট দিচ্ছিল, পরে এই ভিডিও বাইর-টাইরও হইছিল। তো, কবিতা কোথা হইতে আসে দেখাইলে আপনি নিশ্চয় বুকের বামপাশের হার্টে দেখাইবেন না। আত্মার কথা আসে, এক কবিতার দানব আমার উপর ভর কইরা বসে বলেন কেউ, কেউ যেন কবিতাটা আমারে দিয়া লেখাচ্ছে বলেন কেউ কেউ, কান্দানিসমেত কবিতা নাজিল হয় কারো কারো, কারো ঘাম দিয়া জ্বর ছাড়ার মত হয়--এরকম অনেক কথাই হয়ত বলেন কবিকূল। আবার এনাটমি-ফিজিওলজি ঘাটলে ব্রেইন দিয়া লেখার কথা আসে, ব্রেইনের কোন পার্ট কি কাজ করে তা দিয়া কবিতা মেইকিং প্রসেসের একটা হাইপোথিসিস দাড়া করানোও যায়। তো মেধাবী হইলেই কবিতা লেখা যায় ব্যাপারটা এমনও না। আবার মেধা থাকলে যে তারে কবিতা বানায় বইলা গালি দিবেন অন্য কবিরা তাও ঠিক না মনে হয়। বাছবিচার ২০১৩ সালে আমার কবিতা ফার্স্ট ছাপাইছিলেন। কবিতা লেখা তো একটা ঝামেলার ঘটনাই, লোকজন আপনারে দেইখা মুচকি হাইসা তাকাবে ওই যে দেখো আসছে একটা কবি! দুনিয়াতে কবিতার যে একটা ব্যাক-হিস্ট্রি আছে, ক্রনোলজি আছে, এগুলার দোহাই দিয়াই আমার মনে হয় যে কবিতা বইলা আসলে কিছু নাই, সেটা এই বই উল্টাইলে আরো ভাল কইরাই ফিল করতে পারবেন। মঈন উদ্দিন