অলকানন্দা একজন যুদ্ধশিশু যে মুক্তিযুদ্ধের পর পরই কানাডার দত্তক শিশুদের সংস্থার মাধ্যমে রিগা ও অ্যা-্রু গারফিল্ডের সন্তান হিসেবে এলি গারফিল্ড নাম ধারণ করে। বর্ণবাদ, নিজের আসল পরিচয় উন্মোচিত হওয়া, দত্তক মা-বাবার মৃত্যু, যৌন নির্যাতন, সবকিছু মিলিয়ে জীবনের কঠিন সময়ে জাপানি ডাক্তার নোয়াগামিকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেয়ে জাপানে চলে যায়। স্বামীর সূত্রে সেখানে তার সুন্দর একটি পরিবার মেলে। কেইকো’র মতো খুনসুটিতে ভরা দাদিশাশুড়ি পেলেও মনের ভেতর জন্মদাত্রী মাকে একটিবার দেখার জন্য আকূলতা তাকে কেবলই গ্রাস করতে থাকে। অনেক ঘটনার পর বাংলাভাষার শিক্ষক অপরাজিতার মাধ্যমে মাকে খুঁজে পায় সে। অলকানন্দার জন্মদাত্রী মা মাধবীলতা চৌধুরীর জীবনের করুণ কাহিনির বর্ণনাও পাওয়া যাবে এখানেÑ মুসলিম গৃহশিক্ষক নাজিব মৃধার সাথে প্রেম ও পালিয়ে বিয়ে, প্রথম সন্তানের নির্মম মৃত্যু, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক পাশবিক নির্যাতন, মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে আবার সুস্থ হওয়া এবং আরশাদ রহমানের সাথে বিয়ের ঘটনাও বর্ণিত হয়েছে। মূলত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, কানাডায় যুদ্ধশিশুদের প্রেরণ ও হিরোশিমার ভয়ানক ধ্বংসযজ্ঞকে অলকানন্দার জীবন কাহিনির মাধ্যমে এক সূতায় গাঁথার চেষ্টা করা হয়েছে এই উপন্যাসে।
জন্ম ৯ জুলাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি অ্যান্ড ফার্মাকোলজি বিভাগ থেকে কৃতিত্বের সাথে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ) থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্টিফিক রিসার্চ জার্নালে ছাপা হয়েছে তাঁর গবেষণাপত্র। পেশাগত জীবনে ফার্মাসিউটিক্যাল সেক্টরে কাজ করছেন। এ পর্যন্ত ২০টিরও বেশি দেশে ভ্রমণ করেছেন, সেইসাথে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশকে যথাসাধ্য তুলে ধরার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় পারদর্শীতার পাশাপাশি শিখেছেন জাপানি, ফরাসি এবং আরবি ভাষা । বরাবরই নিজেকে একজন সুপাঠক হিসেবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তার মতে পড়ার অভ্যাস না থাকলে, লেখার অভ্যাস গড়ে তোলা মুশকিল । কল্পনায় নিজের মতো করে মানবমনের অলিগলি ঘুরে বেড়াতে ভালো লাগে, তাই অবসরে লেখালেখির পাশাপাশি চলমান জীবন এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট মানুষজন নিয়ে ভাবতে খুব পছন্দ করেন তিনি । ‘অলকানন্দা’ প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস হলেও গত এক দশক ধরে কবিতা, গল্প আর ভ্রমণকাহিনি লিখছেন ।