এমন সময় হঠাৎ উনি বাড়ি ফিরে এসে ডাক দিলেন। "হাজেরা দরজা খোল। ভুলে টুপি রেখে গেছি। তা নিতে এলাম"। নানি দরজা না খুলে জানালা দিয়ে টুপি নিতে হাত বাড়িয়ে দিলেন। এতে নানার মনে সন্দেহ দেখা দিলো! বললেন "দরজা খুলতে সমস্যা কোথায়? ঘরে কি আছে যে দরজা খুলছিস না? আমাকে তা দেখতেই হবে।" নানি বহু অনুনয় বিনয় করে বললেন, "আপনার পায়ে পড়ি এখন মসজিদে যান, দরজা খোলা যাবেনা। আপনি নামাজ পড়ে আসলে আমি সবকিছু বলবো। তখন খুশি হবেন এখন বলা নিষেধ। তাই বলতে পারছি না।" কিন্ত নানা তো নাছোড়বান্দা। বললেন, "দরজা না খুললে তা ভেঙে আমি ভেতরে ঢুকবো।" "দোহাই আল্লাহর এমনটি করবেন না সর্বনাশ হবে তাতে।" নানি কাঁদতে কাঁদতে বললেন। নানা কোনো কথা না শুনে দরজা ভাঙ্গতে যাচ্ছেন দেখে নানী নিরুপায় হয়ে তখন দরজা খুলে দিতে বাধ্য হলেন। নানা ঘরে ঢুকে খুঁজতে খুঁজতে গেলেন ঠিক সেখানটায়, যেখানে জায়নামাজ বিছানো ছিলো। তা উঠিয়ে দেখতে পেলেন জায়গাটি কাঁচা ভেজা মাটিতে সদ্য লেপন করা হয়েছে। দেখেই বললেন, "কবিরাজের বেটি আমার জন্য তাবিজ পুঁতেছো বুঝি মাটির নিচে?" নানী যতই প্রাণপন বোঝাতে চেষ্টা করে বললেন "না আমি সেরকম কিছুই করিনি,কসম আল্লার আমি পরে সব বলবো আপনাকে। আমাকে বিশ্বাস করুন"। কিন্তু তিনি নানীর কোন কথাতেই ভ্রুক্ষেপ করলেন না। কারণ তার মাথায় সন্দেহের ভূত ততক্ষণে চেপে বসেছে। তাই তিনি ভেজা মাটি খু্ৃঁড়ে খুঁজতে লাগলেন। অনেক খুঁড়ে ও যখন কিছুই পেলেন না তখন উনার রাগ আরো বাড়তে লাগলো। অবশেষে নিরুপায় হয়ে সত্য কথা জানিয়ে দিলেন নানি। এই অবস্থায় হঠাৎ বিকট শব্দে ঘর কেঁপে উঠে মাটির দাওয়ার এক পাশ ভেঙ্গে পড়লো। ঠিক ভেজা মাটির জায়গাতেই ফাটা দাগ দেখা দিলো। সে দিন রাতেই নানী স্বপ্নে শুনলেন সেই কণ্ঠস্বর! "তোকে সোনার মোহর দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু তুই নিতে অপারগ হলি। তাই আমি চলে গেলাম। আগামী শবেবরাতের রাতে এশার নামাজের আজানের সময় তোর বাবার বাড়ির পুকুরের দক্ষিণ পাড়ের বাঁশের ঝোঁপে এক ঘটি রুপোর টাকা রাখবো নিয়ে আসিস।"