সংঘাত আর সংঘর্ষের জেরে কৈশোরে বাড়ি থেকে পালিয়ে পৃথিবীর পথে বেরিয়ে পড়া এক মানুষের আশ্চর্য ঘটনাবহুল জীবনের কাহিনী ‘নিনাদ’। আখ্যানটির প্রধান চরিত্র আব্দুর রশিদ—ভঙ্গুর অথচ সাহসী, আধ্যাত্মিক ও দার্শনিক জিজ্ঞাসায় সদাতাড়িত, দু:খজর্জর অথচ ধ্যানী—চমকপ্রদ, কৌতূহল জাগানিয়া এক চরিত্র। সময়ের ঘুর্ণিতে পাক খেতে খেতে, হতবিহ্বল রশিদের সঙ্গে দেখা মেলে বহুবর্ণিল, অবিস্মরণীয় কিছু নারী ও পুরুষের। উজ্জ্বল এইসব চরিত্রের মিথষ্ক্রিয়ায় উপন্যাসজুড়ে বেজে চলে নৈশব্দ্যের নিনাদ; যা –রশিদের মতো— পাঠকেও করে তোলে ঘোরগ্রস্ত। স্মৃতি, প্রিয়-অপ্রিয় মানুষ আর অপ্রত্যাশিত ঘটনার স্রোত তাকে তাড়া করে, প্রতিনিয়ত ভাসিয়ে নিয়ে যায়; অথচ আপাত নিষ্ঠুর কিন্তু দেবশিশুর মতো কোমল আব্দুর রশিদ প্রেম-অপ্রেম, প্রতিশোধ, প্রত্যাখান এবং যুদ্ধের ভেতর এগিয়ে যেতে যেতে যেন আটকা পড়ে যায় এক অলঙ্ঘণীয় নিয়তির ভেতর। এমন অভিনব চরিত্র বাংলা কথাসাহিত্যে দ্বিতীয়টি নেই—দাবি করাটা অতুক্তি হবে না। লিরিক্যাল অথচ গতিশীল ও প্রাঞ্জল এক গদ্যভাষায় রচিত উপন্যাস নিনাদ। চরিত্র আর কাহিনীর নিখুঁত বুননে পাঠককে শুরু থেকে শেষপর্যন্ত মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখার সমস্ত আয়োজন এই উপন্যাসটিতে আছে। প্রিয় পাঠক, বাংলা কথাসাহিত্যে সতেজ হাওয়া বয়ে আনা নতুন কন্ঠস্বরের অভিনব, ঘোরলাগা এক কল্পবিশ্বে আপনাকে স্বাগত।
সুন্দরবন ঘেরা মোংলা বন্দরে জন্ম, আশির দশকের শেষের দিকের কোনো এক বসন্তে। সেই বসন্ত স্থায়ী হয়নি, বসন্ত আসলে স্থায়ী হয় না। ফলে কবিতা আর গল্প ঝুলিতে পুরে বেরিয়ে পড়েছিলেন এক শীতে। সেই শীত বয়ে বেড়াতে বেড়াতে কিছু কুয়াশা সাহিত্যের নামে ছড়িয়ে দিয়ে যাচ্ছেন আপনাদের এই শহরে। পেশায় চার্টার্ড একাউন্টেন্ট মুরাদ কিবরিয়া পড়ালেখা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, সরকারি বিজ্ঞান কলেজে এবং কয়েকটি মিশনারি স্কুলে।