আমাদের জীবন স্মৃতিবিজড়িত এবং নানাবর্ণে শোভিত। প্রতিটি মানুষেরই কিছু স্বাতন্ত্রিক বৈশিষ্ট্য থাকে। জীবনচক্রের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রূপ ধারণ করে আপন সাজে প্রসাধিত মানুষগুলো একে অপরের চেয়ে অনেকখানিই পৃথক। রহস্যময় মানুষের সূক্ষ্ম ও নকশাদার চরিত্রগুলো ধরা বাঁধার অতীত। কল্পলোকের সুন্দর অনুভূতিগুলো যেমন মনের চৈতন্যকে নিদ্রোত্থিত করে জীবনপথ আরো গতিশীল করে তোলে, তেমনি কষ্টগুলো আগামীর পথকে থমকে দিয়ে অন্তরিন্দ্রিয় নির্জীব করে দেয়। এভাবেই সুখ দুঃখের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয় জীবদ্দশার বৈচিত্র্যময় অধ্যায়গুলো। সচরাচর আমাদের স্বপ্ন আর বাস্তবতার মাঝে নিরাকারে দাঁড়িয়ে থাকে একটা অজুহাতের অবকাঠামো। ইচ্ছাশক্তির সুগভীর ব্যাকুলতা, উন্মাদনা ও স্ফীতি নিয়ে এই পাঁচিল ভাঙতে পারলেই আমাদের মনস্কামনা ধীরে ধীরে বাস্তব রূপ নিতে শুরু করে। নিজস্ব ভাবজগতের অসীম কল্পনায় ডুব দিয়ে স্বীয় অনুভূতির রভস ঢেলে দেশপ্রেম, জীবনদর্শন, অনুরাগ, বিরহ—অভিমান, বিদ্রোহ, বিষণ্ণতা, মানসিক দোলাচল, পৌঢ়কাল ইত্যাদি বিষয়গুলোকে ছান্দিক বাক্যালঙ্কার দিয়ে কাব্যিক রূপে সাজানোর চেষ্টার বহিঃপ্রকাশ আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থ “এক চুমুক”।
জন্ম: ফেনী, বাংলাদেশ। শৈশব এবং লেখাপড়া: চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ এবং আমেরিকা। কর্মজীবনঃ ডাটাবেজ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর। মেরিল্যান্ড, আমেরিকা। সখ: দেশ বিদেশ ভ্রমণ, সঙ্গীত, লেখালেখি। আমার জীবনের আদর্শ, সর্বাপেক্ষা মর্যাদাবান ও শ্রদ্ধাভাজন, আমার সকল সফলতার মূল কারিগর আমার বাবা—মা। বাবা একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। সেই সূত্রে বন্দর নগরী চট্টগ্রামেই আমাদের বসবাস ছিল। আমার মমতাময়ী মা তাঁর কঠোর পরিশ্রম আর অনুপ্রেরণা দিয়ে আমাকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলেছেন। মায়ের কাছেই আমার সঙ্গীতে হাতেখড়ি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিষয় নিয়ে অধ্যায়নরত অবস্থায় চট্টগ্রাম সিটি কলেজ থেকে বি কম পাশ করে বাংলার নিজস্ব ভৌগলিক সীমানা পেরিয়ে সুদূর আমেরিকায় পাড়ি জমাই। তারপর থেকে জীবনের মূল বাস্তবিক নিরেট লড়াই শুরু। প্রগতিশীল জগতের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য সংগ্রামের পাশাপাশি পড়াশোনা ও সাহিত্যচর্চা অব্যাহত রেখেছি। সবার জীবনেই উত্থান—পতন থাকে। কিছুটা সময় ব্যর্থতার যাঁতাকলে পিষ্ঠ হলেও মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ কৃপায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞতা, একাগ্রতা, অধ্যাবসায় ও কঠোর প্রচেষ্টার বিনিময়ে স্বকীয়তা বজায় রেখে সৃজনশীলতা, আত্মবিশ্বাস আর দক্ষতার সমম্বয়ে উপরে উঠার সিঁড়ি ধরতে খুব বেশী সময় লাগেনি আলহামদুলিল্লাহ। বাল্যকাল থেকেই সাহিত্যের প্রতি আমার ঐকান্তিক টান। তাই কষ্টসাধ্য হলেও প্রবাসে থেকে বাংলাকে ভালোবেসে কর্মব্যস্ততার অবসরে নিয়মিতভাবে কিছুটা সময় সাহিত্য অনুশীলন করি, আর এভাবেই সাহিত্যের উড়–পে আরোহণ করে কল্পনার ইন্দ্রজালে জাগতিক কাব্যরস বিভিন্ন আঙ্গিকে অনুধাবন করে হৃদয়ের ছন্দোবস্ত অভিব্যক্তি নিয়ে উপস্থাপন করলাম “এক চুমুক”।