রাকিবুল রকি’র গদ্যভাষা অত্যন্ত শাণিত এবং প্রাঞ্জল। বক্তব্যের ভারে তা ন্যূব্জ হয়ে পড়ে না। এ বইটি হাতে নিলে এক নজরে বাংলাদেশের কালোত্তীর্ণ সাহিত্যিকদের বিষয়ে ধারণা পেয়ে যাবেন পাঠক। বইটিতে তিনি কাজী নজরুল ইসলাম থেকে শুরু করে হরিশংকর জলদাস পর্যন্ত বিভিন্ন লেখকের গল্প, উপন্যাস এবং গদ্যের বই নিয়ে আলোচনা করেছেন। এসব আলোচনায় তিনি কথাসাহিত্যের প্রায় অনালোচিত বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন। বিষয়ের পাশাপাশি কথা বলেছেন কথাসাহিত্যের শৈলী নিয়েও। প্রসঙ্গত বলা যায়, বইতে হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে লেখা সর্বাধিক তিনটি গদ্য রয়েছে। এই তিনটি গদ্যে হুমায়ূন আহমেদের ছোটগল্প, সাধারণ পাঠকের দৃষ্টিতে তাঁর সাহিত্য এবং বর্তমান সাহিত্যিকদের উপর তাঁর প্রভাব কতখানি ব্যাপক তা বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন। তাছাড়া নির্দিষ্ট লেখকের গদ্য নিয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রাসঙ্গিকভাবেই উঠে এসেছে সমকালীন কথাসাহিত্যের গতিপ্রকৃতির কথা। এতসব কারণেই আমরা মনে করি, নবীন লেখক ও সাহিত্যপ্রেমীদের পাশাপাশি সাহিত্যের শিক্ষার্থীদের পাঠ্যতালিকায় রাখার মতো একটি বই ‘হুমায়ূন আহমেদ ও অন্যান্য গদ্য’। হয়তো একটা বিতর্ক বা প্রশ্ন উঠতে পারে যে, সমকালের লেখক হয়ে কী তিনি হুমায়ুন আহমেদকেই অন্যান্য লেখকদের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন? শেষতক এটা আবিষ্কার-বিচারের ভার থাকলো পাঠকের ওপরই।
রাকিবুল রকি ১৯৮৫ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জে জন্ম গ্রহণ করেন। আ. আউয়াল এবং রানু বেগমের দ্বিতীয় সন্তান তিনি। পড়াশোনা করেছেন বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে। স্কুলে পড়াকালীন সময় লেখালেখি শুরু । সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় রয়েছে সমান পদচারণ। ইদানীং অনুবাদ সাহিত্যও তাঁর উপস্থিতি লক্ষণীয়। এই লেখকের অন্যান্য অনুদিত গ্রন্থগুলো হালো ‘কাজুও ইশিগুরোর গল্প’ এবং ‘দি পাওয়ার অব ইউর সাবকনশাস মাইন্ড’।