ফারজানা বলে, 'তবে নিজেকে বিবাহিত ব্যাচেলর বলেন কেন? ভাব নেন?' তমিজউদ্দিন বলে, 'ঐ ভাব জিনিসটার বড় অভাব বোধ করি। আর নিজেকে বিবাহিত ব্যাচেলর বলি কেন? সিম্পল। বিবাহ নামক ইন্সটিটিউশনের অর্থটা ঠিক মত বুঝতে পারি না বলে।' ফারজানা বলে, 'তবে অর্থ না বুঝে বিয়ে করতে গেছিলেন কেন? আমি তো অর্থ বুঝি না বলে বিয়ে করি না।' তমিজউদ্দিন বলে, 'আমি তো অর্থ না বুঝেই জন্মেছিলাম, অর্থ না বুঝেই বড় হয়েছি। কোন অর্থ না বুঝেই আজকে আপনার সাথে এখানে এসেছি।' ফারজানা বলে, ‘সো ডিফিকাল্ট! তবে আপনার ভুবনটা বেশ এট্রাক্টিভ।’ তমিজউদ্দিন বলে, ‘কী রকম?’ ফারজানা বলে, ‘নিজের চারদিকে কুয়াশা তৈরি করে রাখেন। কেন রাখেন? মেয়েদের এট্রাক্ট করার জন্য?’ তমিজউদ্দিন হেসে ওঠে; তার হাসির শব্দটা কেমন কাঠ চেরাইয়ের শব্দের মত মনে হয়; পরক্ষণেই তমিজউদ্দিনের মনে হয়- ঠিক কাঠ চেরাইয়ের শব্দ না, অনেকটা ঝিঁঝিঁ পোকার ডাকের মত- নাকি অশ্বের হ্রেষা?... তমিজউদ্দিন... তুমি কেমন যেন আস্তে আস্তে আলগা হয়ে পড়ছ; মন থেকে শরীরটা পৃথক হয়ে পড়ছে। তোমার মগজে কয়েক গ্যালন ধোঁয়া দেয়া দরকার...বুঝতে পারছ কীসের ধোঁয়া? বুঝতেই যখন পারছ, তখন দেরি করছ কেন? উঠে পড়। উঠে পড়। আরো দেরি হলে কী হবে জানো তো? হাত খুলে পড়বে শরীর থেকে; পা খুলে পড়বে শরীর থেকে; চোখ খুলে পড়বে ঘাসের উপর; জিহ্বা খুলে পড়ে উড়ে যাবে বাতাসে...
অপূর্ব সাহা। কবিতার সমুদ্র ছেনে গল্পের মুক্তো কুড়ানাে যার নেশা। গদ্যে-পদ্যে সমান বিচরণ। পেশায় উন্নয়ন কর্মী। ২০০২ সালের একুশে বই মেলায় গল্পগ্রন্থ ‘হষাধ্বনি ও অন্যান্য কণ্ঠস্বর’র মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ। উল্লেখযােগ্য গ্রন্থসমূহ হচ্ছে-বুদ্বুদ (উপন্যাস), স্পর্শপুরাণ (উপন্যাস), বিহঙ্গ হত্যার পূর্বাপর (উপন্যাস), অমীমাংসিত রাতের কবিতা (কাব্যগ্রন্থ) ও কুহেলিবৃত্তান্ত। (কাব্যগ্রন্থ)।। সাহিত্যের পথ-পরিক্রমায় তার সম্বল স্বকৃত ভাষাশৈলী। শব্দকে ব্রহ্মজ্ঞান করেন। শব্দ-সংঘাত সৃষ্টি করে তা থেকে বিচ্ছুরিত। বিভার ভেতর খুঁজে ফেরেন শিল্পের অন্তর্গঢ় রহস্য।