প্রতিদিন একই বিছানায় মাত্র আধ ইঞ্চি দূরত্বে শুয়ে থেকেও কখনো কখনো দু'জনের মাঝে হাজার কোটি আলোকবর্ষ দূরত্ব থেকে যায়; আবার কখনো এমন হয়, হাজার মাইল দূরত্বে-থাকা কোনো দু'জন মানুষের মধ্যকার দূরত্ব আধ ইঞ্চিও না। ভালোবাসা থাকলে পৃথিবীর কোনো সম্পর্কই অবৈধ হয় না, বরং ভালোবাসাহীন সম্পর্কগুলোই একেকটা অবৈধ সম্পর্ক। অথচ,নিজেকে উজাড় করে তুমুল ভালোবেসেও নীলা কে হতে হয়েছিলো কলঙ্কিনী! সত্য বলতে কি,বাঙালি সমাজে বৈধতা বলতে স্রেফ কাগজে কলমে একটা সাইনকেই বুঝে সবাই। আদতে ভালোবাসাই সম্পর্কের প্রকৃত বৈধতা। বিয়ে কেবল সামাজিক বৈধতা দিতে পারে, মানসিক বৈধতা নয়। পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ আছে, যারা যুগ যুগ একই ছাদের নিচে বসবাস করে যাচ্ছে কোননো প্রকার ভালোবাসা ছাড়াই; কখনো বা সেখানে মায়াটুকু পর্যন্ত নেই! আবার, এমনও মানুষ আছে, যাদের দেখা হয়নি যুগ যুগ, অথচ পরস্পরকে ভালোবেসে গেছে আমৃত্যু। পরস্পরের প্রতি মায়াহীন হয়ে পাশে থেকে-যাওয়া মৃত্যুরই নামান্তর। পাশাপাশি থাকা মানেই কাছাকাছি থাকা নয়। দূরে থাকা মানেই কিন্তু দূরত্ব সৃষ্টি নয়। নৈকট্য এবং দূরত্ব নির্ভর করে দু'টি আত্মা ওদের শরীরের সীমানা ছাড়িয়ে ঠিক কতোটুক একে অপরের সাথে মিশে আছে তার উপর। কাছে আসতে শরীর লাগে না, মন লাগে। শরীরের দূরত্বহীনতার সাথে মনের দূরত্বহীনতার কোনো সম্পর্কই নেই।
সামিরা রহমান ৭ ডিসেম্বর, নওগাঁ জেলায় মান্দা চকগোপাল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মায়ের তৃতীয় সন্তান। নিজ জেলা থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার তাগিদে রাজশাহীতে আসেন। তিনি ইংরেজি সাহিত্যে সম্মানসহ স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। বর্তমানে পেশায় একজন শিক্ষিকা। ২০২০ অমর একুশে বইমেলায় লেখিকার লেখা প্রথম উপন্যাস শেষ প্রান্তে বইটি পাঠক হৃদয়ে। ব্যাপক সাড়া ফেলে, বইটির প্রথম মুদ্রণ শেষ হয়ে দ্বিতীয় মুদ্রণ বের হয়। পরবর্তীতে তার লেখা আরো তিনটি তুমুল আলোচিত উপন্যাস হলো- গহীনে শব্দ, বিষন্ন বিকেল ও একরাত্রি। পালাবদল উপন্যাসটি লেখিকার পঞ্চম প্রয়াস। আশা করছি এ উপন্যাসটিও পাঠকের মাঝে তীব্র আড়োলন সৃষ্টি করবে। তিনি ব্যক্তিগত জীবনে প্রচণ্ড আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন আড়ম্বরহীন ও অনেকটা নিভৃতচারী।