শুভ্র বরফের দেশ জাপানের নোবেল বিজয়ী ঔপন্যাসিক ইয়াসুনারি কাওয়াবাতার সম্ভবত সবচেয়ে বিখ্যাত উপন্যাস। উপন্যাসটিতে টোকিওর একজন ধনী ব্যক্তির উত্তর জাপানের তুষার-ঢাকা এলাকার একটি উষ্ণ ঝরনায় ভ্রমণে এসে দুই মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে ত্রিভূজ প্রেমকাহিনি রচনা করার কথা বর্ণনা করা হয়েছে। শীমামুরা বিবাহিত, সুনির্দিষ্ট কোনো পেশা নেই। তবে টাকা-পয়সার অভাব নেই, কারণ উত্তরাধিকার সূত্রে অনেক সম্পত্তির মালিক হয়েছে সে। শীমামুরা যে ঝরনার এলাকায় বেড়াতে যায়, সেখানে হোটেলে কোমাকো নামের বাইজি বা গেঈসার সঙ্গে তার পরিচয়। শীমামুরার দৃষ্টি কামুক হলেও, কোমাকো তাকে প্রকৃতই ভালোবেসে ফেলে। তার প্রতি টান থেকে শীমামুরা পরেও ঐ উষ্ণ ঝরনার এলাকায় যায়। যাবার পথে ট্রেনে ইয়োকো নামের মেয়ের সঙ্গে প্রথম দেখা। শীমামুরা ইয়োকোর মধুর কণ্ঠস্বরে আকৃষ্ট হয়, এদিকে ইয়োকোও কোমাকোকে ঈর্ষা করা শুরু করে। শুভ্র, সুন্দর বরফের দেশের উষ্ণ ঝরনার প্রেক্ষাপটে রচিত এ উপন্যাসের মাধ্যমে ইয়াসুনারি কাওয়াবাতা উত্তরের দেশের প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রা, বিশেষ করে বাইজিদের সংগ্রামমুখর জীবনের কথা তুলে ধরেছেন। উত্তরের ভূদৃশ্য একই সঙ্গে মনোরম এবং নির্জন। কোমাকো নামের মেয়েটা ভালো, কিন্তু তার জীবন নিষ্ফল। ইয়োকোর কণ্ঠ সুন্দর কিন্তু বিষাদমাখা। সুন্দর যেন সবসময় বিষাদময়।
১৯৬৮ সালে সাহিত্যে নােবেল বিজয়ী প্রথম জাপানী লেখক ইয়াসুনারি, কাওয়াবাতার জন্ম ১৮৯৯ সালে জাপানের ওসাকায়। তার প্রথম আর যখন প্রকাশিগল্প যখন প্রকাশিত হয় তখন তিনি হাইস্কুলের ১৯২৪ ছাত্র। ১৯২৪ সালে টোকিও ইম্পেরিয়াল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯২৫ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম গ্রন্থ “দ্য ইজো ড্যান্সার”। অধিকাংশ উপন্যাসেই মানুষের জীবন এবং সৎ জীবন এবং সংস্কৃতিতে যৌনতার বিষয়টিকে তিনি শৈল্পিক দক্ষতায় ফুটিয়ে তুলেছেন। তার লেখনীতে জাপােলখনীতে জাপানের প্রাচীন ঐতিহ্য এবং আধুনিক ভাবধারার, বাস্তবতা এবং কল্পনার অদ্ভুত মিশেল লক্ষ্য করা যায়। ইংরেজি ভাষায় রূপান্তরিত তার উল্লেখযােগ্য গ্রন্থসমূহ হলাে: স্নো কান্ট্রি (১৯৫৬), থাউজ্যান্ড ক্রেনস ১৯৫৯), দ্য সাউন্ড অব দ্য মাউন্টেইন (১৯৭০), দ্য মাস্ট (১৯৭০), দ্য মাস্টার অব গাে (১৯৭২) বিউটি ভাড় স্যাডনেস অ্যান্ড স্যাডনেস (১৯৭৫)। ১৯৭২ সালে কাউয়াবাতা আত্মহ কাওয়াবাতা আত্মহত্যা করেন।