“আর্মি কমান্ডো কোর্স” নামের বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সবচেয়ে কষ্টসাধ্য প্রশিক্ষণ শেষে একজন প্যারা কমান্ডোর জন্ম হয়। ২৬ সপ্তাহব্যাপী কঠোর ট্রেনিং শেষে প্রস্তুত হওয়া কমান্ডো সদস্য থেকে, বাছাই করা কমান্ডোদের নিয়ে একটি স্পেশাল ফোর্সেস (Special Forces) বা বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত বাহিনী গড়ে ওঠে। এই বাহিনীর সংগঠন, প্রশিক্ষণ, কার্যপরিধি, জীবনযাপন, অপারেশনাল দায়িত্ব সবকিছুই ভিন্নধর্মী। প্রতিদিনের রুটিন কার্যক্রমের অবসরে তাঁদের বারংবার স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়, কমান্ডো হিসাবে তাঁর নিজ জীবনের চেয়ে মিশনের গুরুত্ব বেশি। দেশের স্বার্থে যে-কোনো সময়ে, জলে, স্থলে ও আকাশপথে যে-কোনো অপারেশনে তাঁরা তাঁদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে সদা প্রস্তুত! তাঁদের মোটো (Motto) “ডু অর ডাই” (Do or Die) এবং “লাভ ইট অর লিভ ইট” (Love it or leave it), সকল কমান্ডো অস্তিত্বে ধারণ করেন। বাংলাদেশ আর্মি স্পেশাল ফোর্সেস ইউনিটের গৌরবময় ইতিহাস গড়ে ওঠার পেছনে অনেক নিষ্ঠাবান মানুষের দীর্ঘ সময়ের আত্মত্যাগ ও অবদান জড়িয়ে আছে। কমান্ডো প্রশিক্ষণের চারণভূমি “স্পেশাল ওয়ারফেয়ার উইং” নামক স্পেশাল ফোর্সেস ট্রেনিং স্কুলের সম্মানিত ইন্সট্রাকটরবৃন্দ যথাযথ মান সমুন্নত রেখে প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেছেন। তার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী “দ্য ফিউ দ্য বেস্ট” (The few The Best) প্যারা কমান্ডো সেনাসদস্য পেয়েছে, যাদের সমন্বয়ে স্পেশাল ফোর্সেস গঠিত! এই বাহিনীর অগ্রপথিক ১ প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের জীবন রোমাঞ্চকর, উত্তেজনায় ভরা, বিপদসংকুল এবং প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জে ভরা! তবুও এখানে রয়েছে উন্মুক্ত আকাশের হাতছানি, হাস্যরসে ভরা সোনালি সময়, ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আর অমোচনীয় স্মৃতিকথা! নিজেদের “চিতা” বলে পরিচয় দেওয়া এই বাহিনীর সদস্য কর্মজীবনে চিতাবাঘের মতো ক্ষিপ্রগতিসম্পন্ন ও বিচক্ষণ! এই দুঃসাহসিক জীবনকে আপনি হয় ভালোবেসে আলিঙ্গন করুন, নয়তো পরিত্যাগ করুন! লাভ ইট অর লিভ ইট!
Rajib Hossain-এর লেখার পরিধি বিচিত্র। গ্রামে জন্ম নেয়া এবং সেখানে ক্ষেতের আইলে দৌড়ে বেড়ে ওঠার কারণে, দস্যিপনায় ভরা স্মৃতিমুখর শৈশব। লুকিয়ে মাছ ধরা, আম চুরি করা আর তল্লাট চষে বেড়ানো সেই শিশু, তার কৈশোরে এসে পাড়ি জমায় ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের বিস্তৃত প্রাঙ্গনে। ১৭৫ একরের চারণভূমিতে ভিত গড়ে ওঠা। এক সময় সেনাবাহিনীতে যোগদান এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ আর্মি স্পেশাল ফোর্সে কাজ করার সুযোগ হয়। সেনা পরবর্তী দ্বিতীয় জীবনে সুন্দরবনের গহীনে রয়েল বেঙ্গল টাইগার কঞ্জারভেসন প্রজেক্টে কাজ করার সুবাদে, গহীন জঙ্গলের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা রয়েছে। একজন আন্তর্জাতিক আল্ট্রা ম্যারাথন রানার হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে ভ্রমণের সুযোগ হয়েছে। এহেন বিচিত্র কর্মজীবন হবার কারণে অভিজ্ঞতার ঝুলি সমৃদ্ধ। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা বাবা খন্দকার আবু হোসেন একজন রাজনীতিবিদ এবং মা শামসুন্নাহার একজন শিক্ষিকা ও নারী অধিকার আন্দোলনের নেত্রী হবার কারণে, প্রান্তিক মানুষের জীবনের সাথে জীবনভর সখ্যতা। জগত সংসারের অনেক ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ পথের অভিযাত্রী রাজীব হোসেন কবিতা, রম্য রচনা, ভ্রমণ কাহিনী, এডভেঞ্চার, প্রকৃতি কিংবা মিলিটারি বিষয়ে লিখলেও- প্রথম বইয়ের বিষয় হিসেবে বেছে নিয়েছেন নিজের লাইফ কোডঃ “কমান্ডো”। লম্বা সময় ধরে সোশ্যাল মিডিয়াতে খণ্ড আকারে প্রকাশ পাওয়া এই বইটির পাঠক চাহিদা থাকায়, বইটির আয়োজন। লক্ষ্য- তরুণ প্রজন্মের কাছে একটি সম্মান ও পরিশ্রমের জীবনের চিত্র তুলে ধরা। যাত্রা সবে শুরু হলো। তিনি চান, সামনের দিনগুলোতে পাঠকের আত্মার কাছে পৌঁছানোর লেখা নিয়ে আসতে, যেন মানুষের বই পড়ার অভ্যাস আরও পোক্ত হয়।