শিশুর মতো পবিত্র পৃথিবীতে আর কিছু নেই। শিশু কোনো অপরাধ করে না। অপরাধ করার য্যেগ্যতা ও ক্ষমতা তার নেই। শিশুরা মাসুম অর্থাৎ নিষ্পাপ। ফেরেস্তার মতো। কিন্তু একজন কুমারী মাতা যে শিশুর জন্ম দেয় সেই শিশু আর দশটা বৈধ সন্তানের মতো নিষ্পাপ হলেও তাকে বলা হয় জারজ অর্থাৎ অবৈধ সন্তান। আমাদের দেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের অন্যান্য দেশে এই জারজ বা অবৈধ সন্তানের জন্যে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কোনো কিছু না করা হলেও পশ্চিমা দেশগুলোতে এই ধরনের অবৈধ বা জারজ সন্তানদের জন্য রয়েছে বিশেষ শিশুসনদ। অন্য আর দশটা বৈধ সন্তানের মতো তারাও আদর যতœ, সঠিক পরিচর্যা আর শিক্ষা-দীক্ষা পেয়েই বড় হয়। মানুষের মত মানুষ হয়ে দেশের সুনাগরিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে বিন্দুমাত্র বেগ পেতে হয় না তাদের। কিন্তু তৃতীয় বিশ্বের দেশে বিশেষ করে আমাদের দেশে এ ধরনের শিশুর জন্য কোনোরকম রাষ্ট্রীয় বা সামাজিক ব্যবস্থাই গৃহীত হয় না। অন্যসব মানসিক দৃষ্টিভঙ্গির কথা বাদ দিলেও একজন শিশুকে রাষ্ট্রীয় কারণেই সুস্থভাবে গড়ে তোলা দরকার। কেননা অসুস্থ, অস্বাভাবিক মানসিকতার একজন মানুষ সমাজের বোঝা ছাড়া আর কিছুই নয়। কোনো কোনো মনোবিজ্ঞানী বলেন অবৈধ সন্তানেরা, বৈধ সন্তানদের চেয়ে তীক্ষè বুদ্ধি সম্পন্ন হয় ও অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী হয়ে থাকে। এর সত্যতা বহুলাংশে সঠিক প্রমাণিত হয়েছে। পৃথিবীর সভ্যতার ইতিহাসে যেসব অবৈধ সন্তান প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন মার্কিন কথাসাহিত্যিক জ্যাক লন্ডন, ফরাসি ঔপনাসিক, নাট্যকার ও কবি জাঁ যেঁনে, কিংবদন্তি শিল্পী লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি, স্পেনের চিত্রকলার অসাধারণ শিল্পী ও কবি পাবলো পিকাসো, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের নায়ক অ্যাডলফ হিটলার, ইতালিয়ান অভিনেত্রী সোফিয়া লরেন, কিউবার লৌহমানব ফিদেল ক্যাস্ত্রো, বোম্বের সেরা নায়িকা রেখা, হলিউডের লাস্যময়ী অভিনেত্রী মেরিলিন মনরো, বলিউডের প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার মহেষ ভাট এবং বিশ্বখ্যাত উপস্থাপক ও টিভি ব্যক্তিত্ব অপরাহ গেইল উইনফ্রে।