চেঙ্গিজ খান উপন্যাসে লেখক চেষ্টা করেছেন ইতিহাসের সত্যকে যথাসম্ভব রক্ষা করার। এ সম্পর্কে তিনি লিখেছেন : “আমার বিবৃত সমস্ত ঘটনা যে সত্যি সত্যিই ঘটেছিল প্রাচীনেরা তা সমর্থন করবেন।” ঔপন্যাসিক ভাসিলি ইয়ান চেঙ্গিজ খানের জীবন রূপায়ণ করতে গিয়ে মানুষের চিরায়ত জীবনসংগ্রামকেই তুলে ধরেছেন। যে জীবন একদিকে বিক্রম, বিজয়, ঐশ্বর্যে, ভোগে অপার আনন্দে আত্মহারা; অন্যদিকে পরাজয়ে গ্লানিতে আকীর্ণ, অভাবে জর্জরিত, শোষণে পেষণে অত্যাচারে দিশাহারা। ভৌগোলিক দিক থেকে মধ্যপ্রাচ্যের একটি বিশাল এলাকা ও সমৃদ্ধ প্রাচীন নগর গুরগঞ্জ, সমরখন্দ, বোখারা এই উপন্যাসের প্রধান পটভূমি। ‘রক্তপিপাসু’ বিজেতা চেঙ্গিজের ভয়াবহ নির্মমতার সাথে রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তার সফলতা-ব্যর্থতা উপন্যাসে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। পাশাপাশি চিত্রিত হয়েছে মানুষের চিন্তার স্বাধীনতা, বুদ্ধিবৃত্তির বিকাশ ও জ্ঞানসাধনার দুর্জয় সংগ্রামশীলতার ইতিহাস। হাজি রহিম চরিত্রের মধ্য দিয়ে লেখক মানুষের এই সংগ্রামশীলতাকে ফুটিয়ে তুলেছেন। উপন্যাসটিতে শেষ পর্যন্ত লেখক মানুষের জ্ঞান-অন্বেষা ও শুভবুদ্ধির জয় দেখিয়েছেন। হাজি রহিমের ভাষ্যে লেখক জানিয়েছেন: “অধ্যবসায়ী ও ধৈর্যবান ব্যক্তি সূচিত কর্মের শুভ পরিণতি দেখতে পাবেন, জ্ঞানপিপাসুরা জ্ঞানের সন্ধান পাবেন।” বিশ্বসাহিত্যের এক অমূল্য রত্ন ঐতিহাসিক উপন্যাস চেঙ্গিজ খান।