ঈশ্বর মানুষের সাথে সরাসরি কথা বলেন না। নবি-রসুল বা প্রেরিত পুরুষদের সাথেও কথা বলেন বার্তাবাহকের মাধ্যমে। যদিও ব্যতিক্রম হিসাবে বলা হয় মেরাজের সময় হজরত মোহাম্মদের সাথে এবং তুর পাহাড়ে হজরত মুসার সাথে ঈশ্বরের কথা হয়েছে সরাসরি। এই দুই ব্যতিক্রম ছাড়া ঈশ্বরের সাথে সরাসরি কথোপকথনের সৌভাগ্য অন্য কোনো মানুষের হয়নি। এমনকি অজস্র অতিন্দ্রীয়বাদী এবং মরমীসাধক পৃথিবীতে এলেও কেউ দাবি করেননি যে স্রষ্টার সাথে তাদের সরাসরি কথা হয়েছে। কিন্তু নীল ডোনাল্ড ওয়েলস দাবি করেছেন তিনি কথা বলেছেন ঈশ্বরের সাথে। সেইসাথে একথাও বলেছেন যে, যে কোনো মানুষ উন্মুখতা নিয়ে চাইলে ঈশ্বর তার সাথেও কথা বলবেন। তিনি ঈশ্বরের সাথে নানা বিষয়ে যে কথাগুলো বলেছেন তারই বিবরণ নিয়ে লিখিত হয়েছে ‘কনভারসেশন উইথ গড’। নিতান্তই জাগতিক-বৈষয়িক বিষয়ের পাশাপাশি সৃষ্টিতত্ত্ব, স্বর্গ, নরক, ভালোবাসা, করুণা, মনস্তত্ত্ব, মহাজাগতিক শৃঙ্খলা, প্রাকৃতিক নিয়ম ও তার ব্যত্যয়ের ফলাফল সবকিছু নিয়েই খোলামেলা কথাবার্তা হয়েছে ঈশ্বরের সাথে লেখকের। এই বইতে অন্তত এমনটাই দাবি করেছেন লেখক। এই বইয়ের প্রতিটি শব্দ মনোযোগ দিয়ে পড়েছি আমি। কখনো কখনো মূল ইংরেজি বইটার সাথেও অনুবাদ মিলিয়ে পড়েছি। কোথাও অসামঞ্জস্য চোখে পড়েনি। শুধু রহস্যময়তা তৈরি করার জন্য এই গ্রন্থ লিখিত হয়নি। গভীর চিন্তা এবং মানসিক অনুসন্ধিৎসার নিদর্শন রয়েছে পাতায় পাতায়। কেবল বিশ্বাসীদের জন্য এই গ্রন্থ নয়, ঈশ্বরে অবিশ্বাসীরাও এই গ্রন্থ থেকে ভাবনার খোরাক পাবেন। অন্তত প্রাকৃতিক দুর্যোগ যে ঈশ্বরের প্রদত্ত শাস্তি নয়, সেগুলো মানুষেরই অবিমৃষ্যকারিতা ও প্রকৃতি-ধ্বংসের ফলাফল, সেই বিষয়ে একমত হতে পারবেন উভয়েই।