ফ্ল্যাপে লিখা কথা বাংলাদেশের কবিতায় বিশ শতকের ষাটের দশক ও এ দশকে আবির্ভূত নতুন কবিদের কবিতা আক্ষরিক অর্থেই নতুন প্রণোদনা ও মাত্রা সংযোজন করেছে। ষাটের দশকের কবিদের দৃষ্টিভঙ্গি, জীবন-অভীন্সা, নান্দনিকতার নানা অনুষঙ্গ বাংলাদেশের কবিতাকে দিয়েছে নাগরিক রুচি ও বৈদগ্ধ্য। কবি ও কবিতার এমন আমূর রুচিবদল, স্বেচ্ছাচারিতা ও বোহেমীয়পনার এমন আত্নগত পেষণ, এমন কি উপলব্ধির বৈচিত্র্য ও বৈপরীত্যময় মানসিক-উন্মোচন আর কোনো দশকের কবিদের মধ্যে লক্ষ করা যায় না। সুতরাং এ কথা বলাই যায়, বাংলাদেশের কবিতার রুচি- নির্মাণের কলা-কৃতি এ দশকের কবিদের হাতেই বিশিষ্টতা অর্জন করেছে। বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচল,জীবন সম্পর্কিত সদর্থক ও নঞ্র্থক সেন্টিমেন্ট, সময়াবর্তের তৃষ্ণার্ত, ভবঘুরে, পরিব্রাজক-মানসিকতা এ দশকের কবিদের সম্পর্কে পাঠককে কৌতূহলী করে তুলেছে। বাংলা কবিতা আলোচনায় দশক-বিবেচনাকে অনেক গুরুত্ব দিতে না চাইলেও এ কথা সত্য , দীর্ঘ ব্যবধানে, কাব্যবিচারে একটি সময়াবর্তের ঘূর্ণনক্রিয়ার বৈশিষ্ট্যসমূহ দশকওয়ারি আলোচনায় স্পষ্টতর হতে পারে। উন্মোচিত হতে পারে নির্দিষ্ট দশকে আবির্ভূত কবি ও কবিতার মেজাজগত সামষ্টিক ঐক্য কিংবা অনৈক্য। এ কারণে, এ প্রথম একটি দশকের কাব্যকলাকে গুরুত্ব দিয়ে গবেষণামূলক গ্রন্থ রচনা করেছেন নব্বিইয়ের অন্যতম কবি বায়তুল্লাহ কাদেরী। এ গ্রন্থে বাংলাদেশের ষাটের দশকের প্রধান-প্রধান কবির কবিতার বিষয় ও প্রকরণগত বৈশিষ্ট্যসমূহকে চিহিৃত করেছেন তিনি। আর দেখাতে চেয়েছেন কবিদের অর্জিত-অনর্জিত সাফল্যের চিহৃসমূহকে।