বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ থেকে আদিকাল থেকে যুদ্ধবিগ্রহের সাথে কেবল পুরুষের নাম জড়িয়ে থাকলেও নারীরাও যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। যখনই কোনো গৃহ-দুর্গ, গ্রাম-শহর বা দেশের উপর হামলা হয়েছে তখনই নারীরা নিজ দেশ-গৃহ রক্ষায় পুরুষের পাশাপাশি অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে লড়াই করেছেন। পুরুষের পাশাপাশি নারী যোদ্ধাদেরও শিহরন জাগানো কাহিনি বিভিন্ন সময়ে ইতিহাসের পাতায় স্থান পেয়েছে। বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনিতেও নারী যোদ্ধার কথা এসেছে। প্রাচীন ভারতীয় ধর্মীয় গ্রন্থ ঋগ্বেদে রানি বিশপালার কাহিনি জানা যায়। যুদ্ধে একটি পা হারানোর পর তিনি লোহার নকল পা লাগিয়ে আবার যুদ্ধক্ষেত্রে ফিরে আসেন। প্রাচীন মিশরীয় ইতিহাস সূত্রে জানা যায়, খ্রিষ্টপূর্ব ১৫৭০-১৫২৬'র মাঝে রানি ১ম আহটেপ থিবসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মিশরীয় সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। জাবিবি এবং তার উত্তরাধিকার শামসি আরব যোদ্ধা-রানি হিসেবে রাজত্ব করেন (আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব ৭৪০-৭২০)। গ্রিক পৌরাণিক কাহিনিতে লিবিয়া থেকে আগত আমাজন নামে একদল নারী যোদ্ধার কথা জানা গিয়েছে। ভিয়েতনাম এবং জাপানের ইতিহাসে ৩৯ থেকে ২০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বেশ কয়েকজন নারী যোদ্ধার নাম জানা গিয়েছে। প্যালেস্টাইনের রানি মাভিয়া (৩৭৩-৩৮০) রোম, ফোনিসিয়া এবং মিশরের বিরুদ্ধে তার সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছেন। ৬ শতকে যোদ্ধা রানি বোদিকা এবং দ্বিতীয় শতকে সিরিয়ার পালমিরার জেনোবিয়া রোমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। ফরাসি নারী যোদ্ধা জেন দা মন্টফর্ট (১৩০০-৭৪) যুদ্ধক্ষেত্রে ৩০০ অশ্বারোহী সেনার নেতৃত্ব দেন। প্রাক ইসলামি যুগের আরবে নারীরা প্রায়ই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতেন। সরাসরি যুদ্ধ ছাড়াও কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে গোত্রীয় পুরুষদের যুদ্ধে উৎসাহ জোগাতেন এবং আহতদের সেবায় অংশগ্রহণ করতেন। ইসলামের প্রাথমিক যুগেও আরব-নারীরা একই ধারা বজায় রেখেছিলেন। মহানবি হজরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবদ্দশায় যুদ্ধক্ষেত্রে তাঁর স্ত্রীগণসহ মুসলিম নারীদের উপস্থিতির কথা কোনো কোনো জীবনীকার লিপিবদ্ধ করেছেন।