মানুষমাত্রেই স্বাপ্নিক। অবস্থানগত ভিন্নতার কারণেই মানুষের স্বপ্নের মাত্রা এবং স্বপ্নের পরিধিও ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। উপন্যাসের দুটি চরিত্র, যারা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসেছে, স্বপ্ন ভিন্ন হলেও তাদের চলার পাথেয় প্রায় কাছাকাছি। তারা জীবনের উপর চেপে বসা দৈন্যতার করাল পাথর থেকে বেরিয়ে, পারিপার্শ্বিকতার নির্মম শিকল থেকে মুক্তির স্বপ্ন দেখেছে। আর এই স্বপ্নের পথে ছুটতে গিয়ে তাদের একজন কীভাবে মুখ থুবড়ে পথ হারিয়েছে, অন্যজন স্বপ্নের কাছাকাছি পৌঁছালেও তাকে অত্যধিক মূল্য চুকাতে হয়েছে, খরচা করতে হয়েছে জীবনের অমূল্য ধন। সে সব ঘটনা-প্রবাহ এই উপন্যাসের উপজীব্য বিষয়। যেখানে আপনি প্রিয়জনের সঙ্গে এক মিনিট বললেন, সঙ্গে সঙ্গে আপনার খরচকৃত পয়সার একটি অংশ চলে গেল কেন্দ্রে বসে থাকা সুবিধাভোগীদের পকেটে। আপনার বাচ্চাকে একটি খেলনা বা এক প্যাকেট চিপস কিনে দিলেন। বাচ্চাটি খেলার আগেই বা খাওয়ার আগেই আপনার খরচকৃত পয়সার একটি অংশ চলে যাচ্ছে কেন্দ্রে বসে থাকা সুবিধাভোগীদের হাতে। অতি আশ্চর্য এই সিস্টেম! আপনি চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তোলার আগেই সিস্টেমের মাধ্যমে সুবিধাভোগীরা ভাগ পেয়ে যাচ্ছে। কী বিস্ময়কর, তাই না? এভাবে অদৃশ্য সিস্টেম-কেন্দ্রে বসে বিদ্যমান আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থায় ব্যক্তির জীবন-মনন নিয়ন্ত্রণ করছে, যার প্রভাবে ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজের আচরণ কীভাবে বদলে যাচ্ছে, সেটিই এখানে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি।