পশ্চিমের হাওয়ায় প্রাণ মেহেদী ধ্রুব জনরা : জাদুবাস্তব, পরাবাস্তব, রহস্য, থ্রিলার ঘরানার। পশ্চিমের হাওয়ায় পিঁপড়ারা ইঁদুর হয়ে যায়, তারপর একদিন ইঁদুরেরা পঙ্খিরাজ হয়ে নেমে আসে প্রাণের শহরে। উপন্যাসে ৩টি পর্ব আছে। ‘পিঁপড়া’ পর্বে স্কুল শিক্ষকের পরাজয়, চেয়ারম্যানের রাজনীতির উত্থান, খুন, গ্রাম্য যৌনতা। ‘ইঁদুর’ পর্বে মহামারি, কলেজ শিক্ষকের পরাজয়, মেয়রের রাজনীতির উত্থান, খুন, অর্থ পাচার, যৌনতা, প্রেম প্রধান অনুসঙ্গ। ‘পঙ্খিরাজ’ পর্বটি ২০৫০ খ্রিষ্টাব্দ বা তার আশেপাশের সময়ের গল্প। মন্ত্রী মহোদয়ের উত্থান, শিক্ষার পরাজয়, অবাধ যৌনতা। এই পর্বে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে আরণ্যক নামের এক বিপ্লবী দাঁড়িয়ে যায়, অথচ সে মন্ত্রী মহোদয়ের ছেলেও হয়ে এতিমদের জন্য একাডেমি করে দেয়, আর বৈষম্যহীন পৃথিবী করার স্বপ্ন দেখে। উপন্যাসটি মূলত বিউপনিবেশায়ন নিয়ে, সাম্রাজ্যবাদী শক্তির ধরন নিয়ে, তৃতীয় বিশ্বের মানুষ নিয়ে। প্রত্যেক পর্বের কেন্দ্রে আছে জাদুকর টাইপের এক ব্যক্তি, যে নানা গল্প বলে, লোভ দেখায়, উপহার দেয়, সাহায্যের কথা বলে, মানুষকে বিভ্রান্ত করে, পিঁপড়া হয়ে ঢুকে পঙ্খিরাজ হয়ে বের হয়, একসময় পুরো দেশটাকে নিয়ন্ত্রণে নেয়, নতুনভাবে নতুন কৌশলে। এই শোষণের বা নিয়ন্ত্রণের অন্যতম হাতিয়ার প্রযুক্তি। যে কারণে জাদুকর টাইপের লোকটা কখনো বোবা, কখনো অন্ধ কিংবা কখনো হলোগ্রাম হয়ে সবার মনের কথা বলে দেয়, সবার ইতিহাস জানে। জাদুবাস্তব, অতিপ্রাকৃত, রহস্য, থ্রিলার ও ডিস্টোপিয়ান ঘরানার এই উপন্যাসটি পড়া শুরু করলে শেষ করতে ইচ্ছে করবে, প্রচ- গতি টান টান উত্তেজনা শেষ পর্যায়ে নিয়ে যাবে।
মেহেদী ধ্রুব, জন্ম ৩ ফেব্রুয়ারি, শ্রীপুর, গাজীপুর। পড়াশুনা বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন। প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ- মেঘ ও মানুষের গল্প (২০১৯), সাধারণ মৃত্যুর জীবনচক্র (২০২২)।