ফারাজ, হাসনাত ও তাহমিদ। হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ঘটনায় সবচেয়ে আলোচিত এই তিন জন। ফারাজকে প্রথম দিকে জঙ্গি হিসেবে সন্দেহ করা হয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। তাহমিদের হাতে অস্ত্র আর হাসনাতের স্বাভাবিক অঙ্গভঙ্গির ছবি প্রকাশ পাওয়ার পর তো গোটা দেশে ব্যপক তোলপাড় শুরু হয়। জঙ্গিদের হাতে মারা যান ফারাজসহ দেশী-বিদেশী ২০ নাগরিক। জিম্মি অবস্থা থেকে উদ্ধার হওয়ার পর পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয় তাহমিদ ও হাসনাতকে। তাহমিদ কয়েকদিন পর মুক্তি পেলেও হাসনাত অনেকদিন ছিলেন জেলে। ২০১৬ সালের ১ জুলাইয়ের সেই কালরাতে তাহমিদে কোন প্রেক্ষিতে অস্ত্র হাতে নিয়েছিলেন? হাসনাতেরই বা বক্তব্য কি? তাহমিদের কি ভাষ্য? ফারাজ কি আদৌ জঙ্গি ছিলেন? কিংবা ফারাজের হিরোইজমের ঘটনার আদৌ কোনো ভিত্তি আছে? কোন প্রেক্ষিতে জঙ্গিদের রান্না করে খাইয়েছিলেন শেফ শিশির সরকার? জঙ্গি নিবরাস হেসে কি বলেছিল সহকারী কুক আকাশ খানকে? যা শুনে পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছিল আকাশের। হিন্দু হয়েও জঙ্গিদের কি বলে বেঁচেছিলেন ভারতীয় নাগরিক ডা. সাত প্রকাশ? আসল সত্যটা কি? পেশায় সাংবাদিক নুরুজ্জামান লাবু ভয়ংকর এই জঙ্গি হামলার ঘটনায় জীবনের সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে প্রত্যক্ষ করেছেন পুরো বিষয়টি। তুলে এনেছেন আসল সত্য। পুলিশের ব্যারিকেড ভেদ করে অভিযানিক দলের কাছাকাছি থেকে সংবাদ সংগ্রহ করেছেন। তার নিজে চোখে দেখা ভয়ঙ্কর সেই অভিজ্ঞতার বিশদ বিবরণও পাওয়া যাবে এই বইয়ে। ফারাজ-হাসনাত-তাহমিদ ছাড়াও হাসনাতের স্ত্রী শারমিনা করিম, তাহমিদের দুই বান্ধবী ফাইরুজ মালিহা ও তাহানা তাসমিয়া, ভারতীয় নাগরিক ডা. সাত প্রকাশ, হোলি আর্টিজানের স্টাফ- শিশির সরকার, মিরাজ হোসেন, আকাশ খান, দেলোয়ার, শিশির বৈরাগী, সবুজ হোসেন, সুহিন, রিন্টুর ভয়াবহ ও দুঃসহ সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা রয়েছে এই বইয়ে। আরো রয়েছে প্রত্যক্ষদর্শী ও অভিযানে অংশ নেয়া প্রথম পুলিশ কর্মকর্তা থেকে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সেই রাতের অভিজ্ঞতা, পাঁচ জঙ্গির মোটিভেশন, পরিকল্পনা, অপারেশন থান্ডারবোল্টসহ আগাম গোয়েন্দা তথ্যের বিস্তারিত বিশ্লেষণ, নব্য জেএমবি ও আইএসের সম্পর্ক, দুই স্টাফ সাইফুল ও শাওনের করুণ মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানসহ অনেক কিছু। আপনার অনুসন্ধিৎসু মনের অনেক খোরাক মিটবে এই বইয়ে। আরো অনেক অজানা তথ্য পাওয়া যাবে, যা এই বই ছাড়া কোথাও প্রকাশ হয়নি
নুরুজ্জামান লাবু এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতায় নিয়োজিত রয়েছেন। সাংবাদিকতাসহ বৃহৎ পরিমণ্ডলে এ নামেই সমাধিক পরিচিত হলেও তার প্রকৃত নাম নুরুজ্জামান মন্ডল। জন্ম ১৯৮১ সালের ১ অক্টোবর। পেশাগত জীবনে প্রতিবেদক হিসেবে তিনি পাক্ষিক অন্যদিন, সাপ্তাহিক ২০০০, দৈনিক যায়যায়দিন, দৈনিক সকালের খবর, দৈনিক মানবজমিন, বাংলা ট্রিবিউন এর মত শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত রয়েছেন দৈনিক বাংলায়। অপরাধ বিষয়ক সাংবাদিক হিসেবে নুরুজ্জামান লাবুর রয়েছে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সাড়া জাগানো অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। যার অনেকগুলোই জাতীয় ঘটনাবলীকে আন্দোলিত করেছে, আলোচিত হয়েছে। লেখালেখি তার নেশা। হাতেখরি কৈশোরেই। বস্তুনিষ্ঠ ও গভীর অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরিতে নুরুজ্জামান লাবুর ঝোঁক ও নিষ্ঠা সর্বমহলে সুবিদিত, প্রশংসিত। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী ও জঙ্গি হামলার ঘটনাবলী নিয়ে তার প্রতিবেদনসমূহ গভীরতা ও নৈর্বক্তিকতার নিরিখে বিশেষ গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। একই সঙ্গে তা নির্মোহ ও সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপনে সমর্থ হয়েছে।