হাসান এই সময়ের লেখক। উত্তরাধুনিক বাস্তবতাকে এক স্পর্শকাতর, বিশ্লেষণধর্মী ও শৈল্পিক মানস নিয়ে তিনি পর্যবেক্ষণ করেন। মূলত তিনি একজন গল্পকার। তার গল্পে উপস্থিত হয়। নাগরিক জীবনের টানাপোড়েন, আশা-হতাশা, যাতনা কিংবা প্রাপ্তির উপাদান। কাহিনী শুরুর সাথে সাথে চরিত্রগুলোর মনোজগতে টুপ করে প্রবেশ করেন তিনি। মানব গহীন কুঠুরিতে জমাটবদ্ধ অন্ধকারের ওপর আলো ফেলেন। চরিত্রগুলোর মুখে থাকে বাস্তব জীবনের অকৃত্রিম আলাপন। ফলে পাঠকের কল্পনাজগতে তারা সহজেই জীবন্ত হয়ে ওঠে। সেইসব চরিত্রকে পাঠক স্পর্শ করতে পারেন, তাদের শরীরে লেগে থাকা সুগন্ধি ঘামের গন্ধকে অনুভব করতে পারেন। উপলব্ধি করতে পারেন চরিত্রগুলো তাদের অতি পরিচিত। এইসকল চেনা চরিত্রদের নিয়ে তিনি গড়ে তোলেন তার গল্পের সাম্রাজ্য, যা পাঠককে বিচিত্র অনুভূতি দেয়। কখনো তা বিভৎস, অস্বস্তিকর, দুঃখজনক, কখনোবা অতীতের স্মৃতির মতো সোনালি। যে গল্পগুলো তিনি লেখেন সেগুলোর পোশাকি ‘ডার্ক ফিকশন’ নাম দেওয়া হলেও সেগুলোতে সমাজ, রাষ্ট্র এবং রাজনীতি প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ —নানান রূপে আবির্ভূত হয়। উপাখ্যানগুলোর উপস্থাপনে বৈচিত্র থাকে। পাঠক-মনে সংজ্ঞায়িত বা অসংজ্ঞায়িত অনেকগুলো সূক্ষ্ম অনুভূতির জন্ম দেয়। উসকে দেয় জীবনের নানাবিধ বোধগুলোকে। কখনও এই বিষয়গুলিকে তিনি চিত্রায়িত করেন সুক্ষ্ণ রসবোধ আর বিদ্রুপ দিয়ে। হাসান মাহবুবের গল্প বলার ভাষা সাবলীল ও প্রাঞ্জল; গদ্যের গাঁথুনি সুবিন্যস্ত, ঘটনাগুলি সমসাময়িক। -মিনহাজুল ইসলাম