অ্যালিস ওয়াকারের দ্য কালার পার্পল উপন্যাসের প্রথম পৃষ্ঠাই এমন ঝাঁকুনি দেয়, অনেক পাঠক শুরুতে এই চৌকাঠ ডিঙিয়ে বইয়ে ঢোকার সাহস করে উঠতে পারেন না; লেখক অ্যালিস ওয়াকারের মা-ও পারেননি। পিতৃমাতৃহীন কৃষ্ণাঙ্গ তরুণী সেলির গল্প এটি। সৎ বাবার হাতে পাশবিক নির্যাতনের শিকার সেলি চিঠি লেখে ঈশ্বরের কাছে। এভাবেই জন্ম নেয় বিশ শতকের প্রথমার্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও আফ্রিকায় কৃষ্ণাঙ্গদের দুঃখ-দুর্দশার এই বাস্তব আলেখ্য। গ্লোরিয়া স্টাইনেম বলেছেন, 'নিজের কাজ ও মন নিয়ে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ, দুর্বলতা, মায়েদের কাছে ঋণ, সন্তান জন্ম দেওয়ার মূল্য, নারীদের মধ্যে বন্ধুত্ব, এমন পুরুষদের ভালোবাসা যারা নিজেদের তুলনায় হেয় মনে করে নারীদের... এগুলোই হচ্ছে ওয়াকারের উপন্যাসের বিষয়। বর্ণ ও শ্রেণির সীমানা অতিক্রম করার উদ্দেশ্যেই নারীদের অভিজ্ঞতাকে এত শক্তিশালী ভাষায় বর্ণনা করেছেন তিনি।' প্রকাশের (১৯৮২) পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বিতর্কিত বইয়ের তালিকায় দ্য কালার পার্পল আছে সামনের সারিতে। সে দেশের স্কুলের পাঠাগারে প্রায় ত্রিশ বছর নিষিদ্ধ ছিল। বিবিসির দৃষ্টিতে এ বই সর্বকালের সবচেয়ে অনুপ্রেরণাদায়ী একশ বইয়ের একটি। এ উপন্যাসের জন্য প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ লেখিকা হিসেবে পুলিৎজার পুরস্কার পান অ্যালিস। ১৯৮৩ সালে বইটি অর্জন করে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল বুক অ্যাওয়ার্ড। পঞ্চাশ লাখ কপির বেশি বিক্রি হয়েছে এ বই, অনূদিত হয়েছে পঁচিশটি ভাষায়। উপন্যাসটির ওপর ভিত্তি করে স্টিভেন স্পিলবার্গের তৈরি চলচ্চিত্রটিও পেয়েছে বিপুল জনপ্রিয়তা।