ও বাড়িতে খুব অদ্ভুত একটা ব্যাপার ছিল। প্রতিদিন রান্নার পর উনুন থেকে নামানো প্রথম খাবারটা ভোগ চড়ানো হতো "অপদেবতা"-কে। বিশাল রূপোর থালায় সাজানো হতো অষ্টব্যঞ্জন, কাটারিভোগ চালের ঝরঝরে চিকন ভাত আর তিন পদের আহামরি মিষ্টান্ন। সোনালী ঝালর বসানো লেসের ঢাকনায় ঢেকে সেই থালাখানা রেখে আসা হতো ছাদের একটা নির্দিষ্ট স্থানে... কুমারী কন্যাদের সেই ভোগের থালায় হাত ছোঁয়ানো বারণ ছিল। মাসের বিশেষ দিনগুলিতে মেয়ে মানুষের হেঁসেল ঘরে পা রাখাও বারণ ছিল। আর বারণ ছিল ও বাড়ির ছাদে যাওয়া। যত যাই হোক না কেন, ছাদে যাওয়া চলবে না! কেবল যেতে পারতেন আলতাবানু... আলতাবানু একাই! অনিন্দ্য রূপসী এক পক্ককেশ বৃদ্ধা, হিংস্র এবং নিষ্ঠুর। ওই পুরাতন বাড়িটার ভয়াল অপদেবতার সাথে তার অদ্ভুত এক রকমের সম্পর্ক ছিল! লোকে বলে... বহু বহু বহু কাল আগে… বুঝি অন্য কোন জীবনে… আলতাবানু নামে এক ছোট্ট কিশোরী মেয়েকে চড়ানো হয়েছিল ভয়াল সেই অবদেবতার ভোগে। লোকে বলে... ৬৯ বছর আগে হাওরে ডুবে যে কিশোরী নববধূর মৃত্যু হয়েছিল, তিনি আলতা বানু নন! আলতাবানু নামের যে অদ্ভুত রূপসী বৃদ্ধা প্রতিরাতে চৌবাচ্চার হিমশীতল জলে শরীর ডুবিয়ে বসে থাকে, তিনি নাকি আদতে কোন জীবিত মানুষই নন। এবং লোকে বলে... আলতাবানুর অন্দরমহলে কুচকুচে কালো কোন বেড়াল ছানাও নেই, কখনো ছিল না। যদিও নুসরাত তাকে দেখতে পেতো প্রতি রাতেই!
Rumana Bayshakhi অনেকে রসিকতা করে বলেন, বয়সকে অতিক্রম করেছেন তিনি- তাঁর লেখায়। তিনি রুমানা বৈশাখী। তার জন্ম মে মাসের ১২ তারিখে ঢাকায়। ঢাকায়ই বেড়ে ওঠা । পড়ালেখাও । স্নাতকোত্তর করেছেন রসায়ন বিজ্ঞানে, ইডেন কলেজ থেকে। লেখালেখির সাথে জড়িত দীর্ঘদিন। নেশার বশে শুরু করলেও এই সৃজনশীল পেশাটিকেই অবলম্বন করে বেঁচে আছেন, এই পেশাতেই ক্যারিয়ার গড়েছেন আর সেভাবেই বাঁচতে চান সারাটা জীবন । কাজ করেছেন মাসিক সাহিত্য পত্রিকা আলো ও ছায়া-র সহকারী সম্পাদক হিসেবে । নারী বিষয়ক পত্রিকা পারিতেও তিনি সহকারী সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে কর্মরত আছেন প্রিয়.কম-এর এডিটর ইন চার্জ পদে, কাজ করছেন লাইফস্টাইল জার্নালিজম নিয়ে। একই সাথে পরিচালনা করছেন প্ৰিয় আনসারের মতো একটি পরামর্শ সাহিত্যের প্রায় সব শাখাতেই লিখছেন সমান তালে, স্বাচ্ছন্দ্যে। খুব অল্প বয়সেই প্রকাশিত একক বইয়ের সংখ্যাটা বেশ ভারী। সিনেমা ও নাটকের বৈচিত্র্যময় জগতেও পা রেখেছেন আগেই। বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছে তাঁর লেখা একাধিক নাটক।লিখেছেন শর্ট ফিল্ম। তাঁর জীবনে একটিই মাত্র লক্ষ্য। লিখতে থাকা ও ভালো লেখার চেষ্টা করে যাওয়া।