চিত্রালেখা মেয়েটার দিক থেকে কোনোভাবেই চোখ সরাতে পারছে না। এতদূর থেকেও সে অচেনা মেয়েটার বুকের ভেতরকার হুহু করা হাহাকারটাকে খানিকটা হলেও অনুভব করতে পারছে, তার উদাস নয়নে আকাশের দিকে একটু পরপর তাকানোর কায়দা দেখে। এ শহরে কত মানুষ বুকের মধ্যে পাথরের মতো ভার নিয়ে ঘুরে বেড়ায়, অথচ তাদের ঠোঁটে থাকে গোলাপের পাপড়ির মতো নরম হাসি তার কোনো হিসেব নেই। চিত্রা প্রায়ই চিন্তা করে একটা শিশু যখন ছোটো থাকে সে কত অবলীলায় তার মনের অবস্থা বলে দেয় সকলকে। কীসে তার কষ্ট হয় , কে তাকে কষ্ট দিল , একটা শিশুকে কিন্তু কখনই তার কষ্ট কিংবা ব্যথা লুকাতে হয় না । ব্যাপার কতটা শুদ্ধ তাই না? মানুষ যত বড়ো হয় বয়স বাড়ে, বুকের মধ্যে ততটা নিজেকে লুকিয়ে রাখার একটা অদ্ভুত প্রচেষ্টা শুরু হয়ে যায় আপনাতেই । যে যত নিখুঁত করে নিজের দুঃখকষ্ট লুকিয়ে চলতে পারবে সে ঠিক ততটাই সুখী এই নশ্বর পৃথিবীতে। যেন কষ্ট দেখানোটা একটা বিরাট অন্যায়। আদৌ কি দুঃখকষ্ট বিষয়টা লুকিয়ে রাখার গোপন কোনো অধ্যায়? এই বোকা পৃথিবীটাতে দুঃখকষ্ট লুকিয়ে রাখলেই যেন সুখের জন্ম হয় এমনটা ভেবে কত মানুষ কাটিয়ে দিচ্ছে গোটা একটা জীবন। জীবনে দুঃখকষ্টের অস্তিত্ব আছে বলেই তো কত মানুষ সুখের অপেক্ষায় কাটিয়ে দেয় সারাটা জীবন।
আদনীন কুয়াশার জন্ম ঢাকায়। বাবার চাকুরীর সুবাদে ঘুরে বেরিয়েছে দেশের নানান জেলায়,শৈশবের বেশ লম্বা সময় কেটেছে চট্টগ্রামে, তার পুরো নাম রুদাবা আদনীন, ছোটবেলা থেকে শিল্প-সংস্কৃতি চর্চার সঙ্গে জড়িত। বিটিভির নতুন কুঁডি প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। বই পড়ার অভ্যাস থেকেই সাহিত্য চর্চার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। শুরুতে কবিতা লিখতেন। এখন গল্পলিখেন। ফেসবুকে নানান গ্রুপে নিজের লেখা গল্পগুলো পোস্ট করে বেশ আলোচিত হোন এবং পরবর্তিতে ছাপার অক্ষরে নিজের আত্মপ্রকাশ ঘটান। স্বামী নাসিরুদ্দীন রেহান, একমাত্র কন্যা রুদমিলা আদনীন আর একমাত্র বোন রুবাবা আদনীন মুমু কেনিয়ে লেখকের আপন ভুবন।