আমাদের এই বাংলাদেশ আয়তনের দিক থেকে যথেষ্ট ছোট। উপরন্তু সম্প্রসারিত জনসংখ্যার চাপে বনাঞ্চলের পাশাপাশি বন্যপ্রাণীর সংখ্যাও সংকুচিত হয়ে এসেছে। তথাপি পরিবেশগত বৈচিত্র্যের কারণে অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় আমাদের দেশের বন্যপ্রাণীর প্রজাতির সংখ্যা একে বারেই নগণ্য নয়। এই দেশেরই দক্ষিণ-পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরের কোলে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা নদীর মোহনায় অপার সৌন্দর্য নিয়ে অবস্থান করছে পৃথিবীর অন্যতম চির হরিৎ লবণাক্ত পানির বন সুন্দরবন। অন্যান্য আরো প্রাণীর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত প্রাণীটির আবাসভূমি হিসাবে বিখ্যাত এই বনের সুন্দর প্রাণীটির নাম বেঙ্গল টাইগার। যেমন তার বুদ্ধি তেমনি তার সাহস।পরাক্রম, উগ্রতা ও সৌন্দর্যের অনন্য প্রতীক। সুন্দরবনে এর চেয়ে শক্তিশালী আর একটি প্রাণীও নেই, যাকে বন্য পরিবেশে এক পলক দেখার আশায় পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসে ভ্রমণবিলাসী মানুষ। কারণ বৈচিত্র্যে ভরপুর লোনা জলের বন সুন্দরবন বিখ্যাত বেঙ্গল টাইগারের বাসস্থান হিসাবে পৃথিবীব্যাপী পরিচিত লাভ করেছে, নাকি তার মত আকর্ষণীয় প্রাণীটিকে আশ্রয় দিয়ে নিজেই মূল্যায়িত হয়েছে তা নিয়ে অবশ্য বির্তক করা যায়, তবে সুন্দরবন এবং তার বসতি বাঘ উভয়ই যে প্রাণী ও উদ্ভিদ জগতের এক বিষ্ময়কর ও আকর্ষণীয় উপাদানগুলির অন্যতম তা নিয়ে নিঃসন্দেহে কোন বির্তক নাই। তবে একটি বিষয় অমীমাংসিত তা হচ্ছে সুন্দরবনের জীবন ইতিহাসে ঠিক কোন সময়ে বাঘের আগমন ঘটে।
জন্ম ১৫ অক্টোবর ১৯৫৭। গ্রাম ও ডাকঘর গালা, উপজেলা ও জেলা টাঙ্গাইল। পিতা এম এ কদুস মিঞা, মা-কামরুল লায়লা। বাবা ছিলেন তহশীলদার। তাঁর বদলী জনিত চাকুরি সুবাদে যাযাবর ছাত্রজীবনের হাতেখড়ি। তারই ধারাবাহিকতায় বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে থেকে ১৯৭৩ খ্রি.-এ এসএসসি, ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে শামসুল হক মহাবিদ্যালয় থেকে এইচএসসি ও ১৯৮০ খ্রি. ধনবাড়ি কলেজ থেকে বিএ (কলা) পাশ করেন। ১৯৮৩ খ্রি.-এ ফরেস্টার হিসেবে চাকুরিতে যােগদান এবং তারপর ডিপ্লোমা বনবিদ হয়ে ওঠা। তিনি ছিলেন ‘ডিপ্লোমা বনবিদ পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা কোষাধ্যক্ষ। আগষ্ট ২০১৬ খ্রি.-এ ফরেস্ট রেঞ্জার হিসেবে অবসর জীবনের শুরু। বন বিভাগে চাকুরির সুবাদে বন, বন্যপ্রাণীসহ বননির্ভর মানুষের সাথে তার ঘনিষ্টতার সম্পর্ক। অথচ এই প্রাণী প্রেমের সূতিকাগার হচ্ছে তার পরিবার। বিশেষ করে দাদা ফেলাল উদ্দিন ও দাদি মিষ্টি খাতুনের কাছ থেকে পশুপাখির প্রতি দুর্বলতার হাতেখড়ি। যা বাবা এম এ কদ্দুস মিঞা ও মাতা কামরুল লায়লার হাত ধরে শক্ত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়। সহধর্মিণী লুৎফুন্নাহার পলি। সুখময় সংসারে, ছেলে মাে. মাের্শেদুল মােজাহীদ, বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার, পুত্রবধু ফার্মাসিস্ট তাসনীমা জেরীন, নাতনী আলভীনা সােহাইরা, কন্যা ডা. আসিফা তাসনীম মৌতুবা ও জামাতা ইমাম মুত্তাকী অনিক। উচ্ছৃঙ্খল জীবন থেকে আলাের পথে ফিরিয়ে আনতে যাদের অবদান সবচেয়ে বেশি তারা হচ্ছেন মানিকগঞ্জ জেলার জনাব মঞ্জুরুল আলম, কিশােরগঞ্জের কটিয়াদি নিবাসী জনাব আবিদ আনােয়ার। অবশেষে প্রায় হাত ধরে যিনি টেনে তুলেন তিনি হচ্ছেন সদুল্যাপুর নিবাসী প্রিন্সিপাল মন্টু সরকার । নিম্ন মাধ্যমিকে দেয়াল পত্রিকা দিয়ে লেখালেখির শুরু । সামাজিক যােগাযােগ মাধ্যম ও বন বিভাগীয় সাময়িক পত্রিকাসহ বিভিন্ন পত্রিকায় তার লেখা প্রকাশিত হয়েছে। তার প্রথম গ্রন্থ ‘মৃত্যুকূপে বন্যহাতি। বিগত ৬ মে বইয়ের মােড়ক উন্মোচনের একমাস পেরুতে না পেরুতেই জুন ২০২২-এ দ্বিতীয় সংস্করণের আত্মপ্রকাশ।