১৯৭২ সনের ১২ অক্টোবর। উরুগুয়ের ওল্ড ক্রিশ্চিয়ান নামে এক সৌখিন রাগবি দল খেলতে যায় চিলিতে। তাদের নিয়ে চার্টার্ড করা উরুগুয়ে বিমানবাহিনীর ফেয়ার চাইল্ড এফ-২২৭ প্লেন মন্টিভিডো হতে সান্টিয়াগোর উদ্দেশ্যে যাত্রা করে এবং এক পর্যায়ে দুর্যোগপূর্ণ ঘূর্ণিবাত্যায় পড়ে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। আটদিন ধরে চিলি, আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ে এই তিন দেশ এক সঙ্গে উদ্ধারকার্য চালায়। কিন্তু কোনো ফল হয় না। দক্ষিণ গোলার্ধে সে সময় বসন্তের প্রথম। তার ফলে আন্দিজ তখন প্রবল তুষারপাতে আবৃত। ফেয়ার চাইল্ডের ছাদ সাদা থাকায় সাদা তুষারের মাঝে তা খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে ওঠে। এছাড়া ধারণা করা হয় যে, যাত্রীরা কেউ হয়তো বেঁচেও নেই। কারণ, প্রথম বিমান পতনে বিধ্বস্ত এবং তার পর প্রবল তুষার আর প্রচণ্ড শীত বলে। বিমানের যাত্রী ছিল পনেরোজন রাগবি খেলোয়াড় ছাড়াও পঁচিশজন বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনসহ মোট বিয়াল্লিশজন। সকলেই উরুগুয়ের সম্ভ্রান্ত পরিবারের। দশ সপ্তাহ জনমানব বিচ্ছিন্ন হয়ে, ক্ষুধা এবং বৈরি পরিবেশের সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে কজন বেঁচে ছিলেন আর কীভাবে বেঁচে ছিলেনসেই চাঞ্চল্যকর সত্যের সন্ধান করেছেন এই বইয়ের লেখক ইংরেজ তরুণ পিয়ার্স পল রিড। এই ঘটনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি উরুগুয়েতে এসে জীবিত ষোলোজন ও সকল পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করেন। তাদের কাছ থেকে ও অন্যান্য সরকারি তথ্যাবলি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জেনে নেন। তারপর তিনি তা তাদের বর্ণনানুযায়ী একজন প্রত্যক্ষদর্শীর মতো এই সত্য কাহিনি লেখেন। এই বই দুনিয়া কাঁপিয়েছে, এর কাহিনি অবলম্বে নির্মিত হয়েছে সাড়া জাগানো চলচ্চিত্র। সৈয়দ রইসুল হক পিয়ার্স পল রিডের এলাইভ : দ্য স্টোরি অব দ্য আন্ডেজ সারভাইভার্স (১৯৭২) বইটি জীবন যখন যেমন শিরোনামে বঙ্গানুবাদ করেন যা ১৯৭৮ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রা’য় প্রকাশিত হয়। ঐতিহ্য এই প্রথম অনুবাদকর্মটি গ্রন্থাকারে প্রকাশ করল।