লেখকের আত্মা কী? কীভাবে তা গড়ে ওঠে? এসব প্রশ্নের অনেক উত্তর। কিন্তু সবারই থাকে নিজস্ব ধ্যান ও বোঝাপড়া। কৃষক ও লেখকের তৎপরতার মধ্যে একটা সাযুজ্য আছে। উভয়েই চাষ করেন - একজন শব্দের, অপরজন বীজের। দুজনেই গভীর ধ্যানে ফসল ফলাতে প্রবৃত্ত থাকেন। কিন্তু চারপাশের এত টেক্সটের ভিড়ে লেখক কি হাতে সবুজ দস্তানা, পায়ে গামবুট ও চোখে রঙিন চশমা নিয়ে ঘোরেন? যেহেতু অনেক অন্তর্গত রহস্যের অনুসন্ধান লেখক করে থাকেন, তাকে সতর্ক থাকতে হয় যাতে ভাষার দৌরাত্ম্যে ও বিষয়ের অবলোপনে বক্তব্য যেন শুধু নিরস বস্তু হয়ে না ওঠে। ফজলুল কবিরী সতর্কতার সাথে দৃষ্টি প্রসারিত করে দেখাতে চেয়েছেন সমাজ-রাষ্ট্রে বিদ্যমান লেখকের বুদ্ধিবৃত্তিক তৎপরতা ও দার্শনিক প্রভাবকে। গদ্যের খামারে এ ধরনের বই অভিনব এবং সময়ে সময়ে সাহিত্য-সংস্কৃতিতে যেসব পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয় তার কিছু ঝাঁজ ও প্রসাদের নির্যাস তার লেখকের বুদ্ধিবৃত্তিক দায় ও দর্শনের খোঁজে বইটি। লেখক ফজলুল কবিরীর নাছোড় মানসিকতা, নির্মোহ ও সাহসী বিশ্লেষণ বইটিকে আলাদা মর্যাদা দেবে নিঃসন্দেহে। এটি পাঠ করা যেতে পারে একজন সৎ ও নিবেদিত লেখকের দর্শন হিসেবে, যার বিচ্ছুরণ মাঝেমধ্যে এমন স্বতঃস্ফূর্ত যে রীতিমতো ঘোর লাগিয়ে দেবে! কচ্ছপ-খরগোশের দৌড়ে শামিল না হতে চাওয়া একজন লেখকের গদ্যভুবনে আপনাকে স্বাগতম।
ফজলুল কবিরী জন্ম ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দে। বেড়ে উঠেছেন চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানার অন্তর্গত হালদা নদীর তীরবর্তী গ্রাম উত্তর মাদার্শায়। পড়াশোনা করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। লেখালেখির সাথে সম্পৃক্ততা দুই দশকের। সাহিত্যকর্মসমূহ বিভিন্ন ছোটোকাগজ, জাতীয় দৈনিক ও ওয়েবজিনে প্রকাশিত। প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ : ‘বারুদের মুখোশ’ (বাঙলায়ন, ২০১৫), ‘ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া গল্প’ (জেব্রাক্রসিং, ২০১৮), ‘ডোরাকাটা ক্যাডবেরি’ (জলধি, ২০২২); উপন্যাস : ‘ঔরসমঙ্গল’ (বেহুলা বাংলা, ২০১৭) এবং প্রবন্ধ : ‘লেখকের বুদ্ধিবৃত্তিক দায় ও দর্শনের খোঁজে’ (দ্বিমত, ২০২৩)।