চিলেকোঠার ‘নক্ষত্রের খোঁজে’ প্রতিযোগিতা ২০২২ এর শ্রেষ্ঠ উপন্যাস ‘মধুবাজ’। রেদওয়ান খানের এ উপন্যাসটাকে সেরা হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে মূলত উঁচু মানের বয়ানভঙ্গীর কারণে। যা এ উপন্যাসের মূল শক্তি। জীবন দর্শনের দ্যুতিও উপন্যাসে আলাদা স্বাদ যোগ করেছে। যে জীবন দর্শন, চেনা হয়েও ঠিক যেন চেনা নয়। এখানে দুঃখ জীবনকে ছাপিয়ে ওঠে না কোথাও।br দুঃখ এ উপন্যাসে জেতে না; বরং এক শান্ত-দৃঢ়-চলমান জীবন সংগ্রাম সবচেয়ে বড় সত্যি হয়ে সামনে আসে আর বরাবরের মত আমাদের বোঝায়- চলমান জীবন সংগ্রামের চেয়ে মহত্তর আর কিছুই নেই।br গড়পড়তা একটা গল্পের সূত্রপাত, ক্লাইমেক্স এবং চূড়ান্ত পরিণতি- এমন ছকে বাঁধা উপন্যাস এটি নয় বরং ‘মধুবাজ’ লেখা হয়েছে ননলিনিয়ার বয়ান ভঙ্গীতে। পাঠক হয়তো বিভ্রান্ত হয়ে যেতে পারেন ভেবে ভেবে যে এখানে গল্প কোথায়, সমাপ্তি কোথায়, গল্প কোথা থেকে কোথায় যাচ্ছে? br উত্তরে শুধু এটুকুই বলা যায়, ঔপন্যাসিক এ উপন্যাসে নারী-পুরুষের সম্পর্কের জটিলতা আর প্রবাস জীবনের বুক ভার করা সংগ্রামের ছবি এঁকেছেন। প্রবাসের পথে পথে ছড়ানো গল্পগুলো জড়ো করে একটা বড় ক্যানভাসের ছবি দাঁড় করাতে চেয়েছেন। আর এ ছবি এত স্পষ্ট যে, পাঠক হয়তো কোথাও কোথাও চমকে উঠবেন নিজ জীবনের সাথে মিল খুঁজে পেয়ে অথবা কোথাও কোথাও হয়ে পড়বেন বিষণ্ন। পাঠককে বিষণ্ন করে তোলা হয়তো উপন্যাসের উদ্দেশ্য নয়; তবে বইয়ের পাতার বিষণ্নতা, রঙহীনতা এবং দীর্ঘশ্বাস পাঠকের মনে ছড়াতে পারাও এক বিশেষ ক্ষমতার পরিচায়ক। এ ক্ষমতা বা সক্ষমতাই মূলত একটা উপন্যাসকে স্বার্থক করে তোলে। সেই বিচারে ‘মধুবাজ’ উপন্যাসও একটি স্বার্থক উপন্যাস হিসেবে পাঠককে মুগ্ধ করবে।