বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের মাসিক হওয়া স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় এক প্রক্রিয়া। মাসিকের মাধ্যমেই একজন নারী সন্তান জন্মদানের প্রাথমিক সক্ষমতা অর্জন করেন। এমনকি মাসিকের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে নারীর সারাজীবনের প্রজনন স্বাস্থ্য ও স্বাভাবিক সুস্থতা। কিন্তু একথা অস্বীকার করা যাবে না, একবিংশ শতাব্দীতেও আমরা এ বিষয়ে নীরবতাই পালন করি। এই নীরবতার আড়ালে কত নারীর চোখের জল বিসর্জিত হয় তা বলা কঠিন। এমনকি কতজন মেয়ে এই সময়ে স্কুল কিংবা নিজেদের কর্মক্ষেত্র থেকে দূরে থাকে সে-হিসাবও দুঃসাধ্য। মাসিক তথা পিরিয়ড সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে। যথা: সাধারণ ও অসাধারণ। সাধারণ মাসিক-এর ক্ষেত্রে নারীদের তেমন কোনো জটিলতার মুখোমুখি হতে হয় না। কিন্তু অসাধারণ মাসিক-এর ক্ষেত্রে একেকজন নারী একেক ধরনের জটিলতার মুখোমুখি হয়। কেউ কেউ আবার মৃত্যুকেও আলিঙ্গন করতে বাধ্য হয়।br ডা. ছাবিকুন নাহার প্রথমত একজন নারী, পেশায় তিনি গাইনিকোলজিস্ট। নারী জীবন তথা পিরিয়ড-এর শুরু থেকে প্রায় সর্বশেষ অবধি নানাবিধ অভিজ্ঞতা তিনি সঞ্চয় করেছেন। সেইসব অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি রচনা করেছেন ‘নারীকথন : সুস্থ মাসিক ব্যবস্থাপনা সুন্দর জীবন’ শিরোনামের বই। আমাদের দেশীয় প্রেক্ষাপটে আজও আমরা কিশোরী মেয়েকে মাসিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত কোনো শিক্ষাই প্রদান করতে পারি না। আবার দেশ, সমাজ ও পারিবারিক ট্যাবুও এক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে একজন কিশোরী মেয়ে পিরিয়ড সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে হয়রানি হওয়ার পাশাপাশি বিবিধ শারীরিক জটিলতায়ও আক্রান্ত হয়। এমতাবস্থায় নারী জীবনে পিরিয়ডে-এর সূচনাকালে এই বইটি পাঠ করতে পারলে বহু বিষয় সম্পর্কে অবহিত পারবে একজন কিশোরী।br ডা. ছাবিকুন নাহার খুবই সাবলীল ভাষায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তথা কিশোর-কিশোরীদের উপযোগী করে বইটি রচনা করেছেন। একই সাথে যে-কোনো বয়সের নারীগণ এই বইয়ের মাধ্যমে পিরিয়ড সম্পর্কিত জটিলতাসমূহের পরিচয় পাবেন এবং অন্যজনকে পরামর্শ প্রদান করতে পারবেন।