সমাজে চলাফেরা করতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের সঙ্গতি ও অসঙ্গতিপূর্ণ নানাবিধ কর্মকাণ্ডের মুখোমুখি হতে হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সমাজের কিছু বাস্তব ঘটনা এই গল্পগ্রন্থে সুন্দর ও নান্দনিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। "কলঙ্কিনী" গল্পে রত্নার বাবা মারা যাওয়ার পর পুরো দায়িত্ব রত্নার মায়ের উপর পড়ে, কিন্তু রত্নার মা'কে পরিবারক চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। এদিকে রত্না ও রত্নার বোন দু'জনেই অল্প সময়ে বেড়ে ওঠে এবং দেখতে বেশ সুশ্রী হওয়ায় কিছু লাফাঙ্গার নজরে পড়ে পুরো পরিবার হুমকির সম্মুখীন হয়। এভাবেই পুরো গল্পটির কাহিনি রচিত হয়েছে। তাছাড়া "হোমায়রা" গল্পটিও অসাধারণ পটভূমিতে রচিত হয়েছে। যেখানে বাবা-মা থেকেও না থাকার মতোই জন্মের কয়েক মাস পর মা হোমায়রাকে ফেলে চলে যায় এবং বাবা নেশায় দিন পার করে। ফলে হোমায়রা দাদির কোলেই বড় হয়। এমনই করুণ কাহিনি নিয়ে রচিত হোমায়রা গল্পটি। অন্যদিকে "নীল শার্ট" গল্পটিও অনবদ্য হয়েছে। এখানে একটু বলতেই হয়, এই গল্পে প্রবাসী এক ভাইয়ের করুণ ও হৃদয় বিদারক বাস্তব জীবনে ঘটে যাওয়া জীবন কাহিনি তুলে ধরা হয়েছে। "নূরী" গল্পটি রচিত হয়েছে এক ভিন্ন মাত্রায়। পুরো গল্পে নূরী অসম্ভব সুন্দরী হলেও নিজেকে আড়ালে রেখে বিভিন্ন কলাকৌশলে ডাক্তার সায়মনকে আপন করে নেয়। এই গল্পগ্রন্থে অন্য আরেকটি অসাধারণ গল্প "রক্তের টান।" এই গল্পটি রচিত হয়েছে বাস্তবে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে যা কিনা পুরো গল্পগ্রন্থের কেন্দ্রবিন্দু বলা যেতে পারে। একটি ভুলের কারণে পুরো একটি পরিবার মাটির সাথে কীভাবে ধুলিসাৎ হয়ে যায় তা এই গল্পে উঠে এসেছে। সবশেষে "শতরঞ্চ" গল্পটি নিয়ে বলতে গেলে, এই গল্পে তিন বন্ধুর চাকরি তথা ব্যক্তি জীবনের সচারাচর ঘটে যাওয়া বাস্তব প্রেক্ষাপটকে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। গল্পটি এই গ্রন্থের অসাধারণ এক সৃষ্টি। পরিশেষে বলতে চাই, পাঠক গল্পগ্রন্থটি পড়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুললেই নিজেকে স্বার্থক মনে করবো।