অচেনা মেয়েটির চোখ টলমল করছে, কন্ঠ ভেঁজা। ঠোঁটে অমূল্য কিছু পাবার আনন্দ। কিন্তু অয়নের মুখশ্রী কঠিন থেকে কঠিনতর হলো। "প্রাপ্তি" নামটি তার হৃদয় মস্তিষ্ককে নাড়িয়ে দিলো। চোখের দৃষ্টি হয়ে উঠলো তীব্র। অপর দিকে আহসানের মুখমন্ডল বিস্মিত রুপ নিলো। সে যেনো কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না। সাথে সাথে সন্দেহের তীর চললো মেয়েটির উপর। কে এই মেয়ে! শক্ত এবং গম্ভীর কন্ঠে বললো, "ফাজলামি আমার অতীব অপছন্দ। আপনি আমার গাড়ির নিচে পড়েছিলেন বিধায় দয়া করে এখানে নিয়ে এসেছি। অথচ সেই সাহায্যকারীর সাথে এমন করাটা কি সমুচিত! কিসের ধান্দা করছেন? আর আমার নিখোঁজ ওয়াইফের কথা আপনি করে জানেন?" হ্যা, অয়নের স্ত্রীর নাম প্রাপ্তি। বিগত দেড় বছর যাবৎ সে নিখোঁজ। কোথায় আছে! কি করছে! আদৌ বেঁচে আছে কি না কেউ জানে না। প্রাপ্তি যেনো হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। আজ অবধি সে নিখোঁজ। অথচ একটা অচেনা মেয়ে দাবি করছে সে প্রাপ্তি। এটা কিভাবে সম্ভব! মেয়েটির গড়ণ প্রাপ্তির মতো হলেও তার চেহারা একেবারেই ভিন্ন। চোখ, ঠোঁট, চাহনী, নাক সব ভিন্ন। অয়নের মাথা ধরে এসেছে। ক্রোধ, বিষাদ, শুন্যতা তাকে ঘিরে ধরলো। বুকের ভেতর ছাই চাপা আগুনটা দাও দাও করে জ্বলে উঠলো। তীব্র কন্ঠে বলে উঠলো, "আমি আপনাকে চিনি না, আল্লাহ ওয়াস্তে আমার ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিবেন না!" "অয়ন, তুমি সত্যি আমাকে চিনতে পারছো না? তুমি ই তো বলতে আমাকে নাকি অন্ধকারেও ঠিক চিনে পারবে! সব কি মিথ্যে ছিলো তবে! তুমি বলতে আমার অস্তিত্ব তোমার রক্তে মিশে আছে! সব মিথ্যে?" অয়ন আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলো না। মেয়েটার ভেজা কন্ঠ গায়ে কাঁটার মতো বিধছে। এই কথাগুলো সে শুধু প্রাপ্তিকে বলেছিলো। মেয়েটি কিভাবে জানলো! কে এই মেয়ে! কে তুমি তন্দ্রাবিলাসী!