বঙ্গবন্ধু ও কর্নেল অশোক তারা বইটিতে একজন মানুষ নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে অন্যজনকে কিভাবে বাঁচিয়ে দেয় তার ইতিহাস পাওয়া যাবে। মানুষের অনেক ধর্ম আছে তার মধ্যে মনুষ্যত্ব ধর্মই বড়। মানুষের দুটি সত্তা: একটি জীবসত্তা, অপরটি মানবসত্তা বা মনুষ্যত্ব। মনুষ্যত্ব শিক্ষাটাই চরম শিক্ষা আর সমস্তই তার অধীন। তাকেই বলি শ্রেষ্ঠ শিক্ষা, যা কেবল তথ্য পরিবেশন করে না, যা বিশ্ব সত্তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের জীবনকে গড়ে তোলে। আমাদের শিক্ষার মধ্যে এমন একটি সম্পদ থাকা চাই যা কেবল আমাদের তথ্য দেয় না, সত্য দেয়; যা কেবল ইন্ধন দেয় না, অগ্নি দেয়। ভারতীয়রা আমাদের সাহায্য না করলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হতো কিনা তা ভেবেছিলাম। অশোক তারা বঙ্গবন্ধুর পরিবার রক্ষা করতে না পারলে ভারতের সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্বের আস্থা ভেঙ্গে যেতেও পারতো। অশোক তারা নিজের জীবন ঝুঁকিতে রেখে একজন ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার পরিবারকে রক্ষা করছেন তা থেকে আমাদেকে শিক্ষা নিয়ে পারস্পরিক সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে আমাদের নতুন প্রজন্মের শিক্ষা এখনও অসম্পূর্ণ রয়েছে। মনে রাখতে হবে অসম্পূর্ণ শিক্ষায় আমাদের দৃষ্টি নষ্ট করিয়া দেয়- পরের দেশের ভালোটা তো শিখতে পারিই না, নিজের দেশের ভালোটা দেখবার শক্তিও চলে যায়। আরো মনে রাখতে হবে মনুষ্যত্ব আমাদের পরম দুঃখের ধন, তাহা বীর্যর দ্বারা লভ্য। সকল মানুষের মস্তিষ্কে মনুষ্যত্বের আসল উপাদান থাকে সেগুলো কঠোর ধ্যান সাধনার মাধ্যমে অর্জন করতে হয়। যখন স্বাধীনতার কোনও উদ্দেশ্য থাকে না, যখন তারা পুরুষ ও মহিলাদের অন্তরে খোদাই করা আইনের শাসন সম্পর্কে কিছু জানতে চায় না, যখন বিবেকের কণ্ঠস্বর শোনে না, তখন তা মানবতা ও সমাজের বিরুদ্ধে পরিণত হয়। অশোক তারা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের কণ্ঠস্বর শুনতে পেয়েছিলেন- “তুমি আমাদের রক্ষা না করলে ওরা আমাদেরকে মেরে ফেলবে" এই কথা শুনে অশোক তারা সেদিন সত্যিকারের মনুষ্যত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন। জীবন রক্ষা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু পরিবারের। ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশে ফিরে আসার পরে ১২ তারিখেই তিনি অশোক তারাকে ধানমন্ডির বাড়িতে ডেকে নেন। ধানমন্ডির বাড়িতে যেতেই গগনস্পর্শী ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষটি ভারতীয় এই সেনা অফিসারকে জড়িয়ে ধরে বললেন, 'তুমি আমার আর এক ছেলে। তোমার জন্য আমার দরজা সব সময় খোলা থাকবে, তুমি যখন খুশি আসবে!' আবেগে তখন অশোক তারার গলা ধরে আসছে। বঙ্গবন্ধু অশোক তারার সাথে তখন বার বার বলেছিলেন 'ন'মাস ধরে একটা জাতির ওপর যে প্রবল অত্যাচারটা চলেছে, সেখান থেকে কিভাবে আবার আমরা শিরদাঁড়া করে উঠে দাঁড়াব সেই চিন্তাটাই শুধু আমায় কুরে কুরে খায়!' বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সময় কাটানোর সেই বিরল মুহূর্তগুলোর স্মৃতি নিয়ে অশোক তারা ভারতে ফিরছেন ১৯৭২-এর ২০শে জানুয়ারি। বিদায়কালে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব একটি ঘড়ি অশোক তারার হাতে পড়িয়ে উপহার দিয়েছিলেন।
দি অ্যাম্বাসেডর প্রকাশনীর স্বত্তাধীকারি শামীম আহমেদ একজন বাংলাদেশি লেখক গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক। তিনি ইতিহাস এবং সরকার ও রাজনীতি বিষয়ে উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন। সাংবদিকতা পেশা থেকে শামীম আহমেদের লেখালেখির গােড়াপত্তন । এই বছরে সাংবাদিকতা পেশায় তার দুই দশক পূর্ণ হবে। সাংবাদিকতা ও লেখালেখি ছাড়াও শামীম আহমেদ সমাজ ও সংস্কৃতির উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কর্মে যুক্ত আছেন। উন্নত ও আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মানে সকলের সাথে একত্রিত ভাবে কাজ করতে এই লেখক তৃতীয় সহস্রাব্দের প্রথম শতাব্দীর গােড়ার দিকে প্রতিষ্ঠা করছেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা নতুনধারা ফাউন্ডেশন। সমাজ ও সংস্কৃতির ইতিবাচক পরিবর্তনে তার সংস্থার ভুমিকা উল্লেখযােগ্য। রাষ্ট্রের জন্য কর্ম - বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে শত্রুর আক্রমন থেকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রাখায় ভারতীয় ততকালিন সেনা কর্মকর্তা কর্নেল অশােক তারাকে এই লেখক তার সংস্থা নতুনধারা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ২০১২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবর্ধনা ও সম্মাননা প্রধান করছেন। স্বাস্থ্য, কৃষি ও গ্রামীন অর্থনীতি :- এই লেখকের নেতৃত্বে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও নতুনধারা ফাউন্ডেশন যৌথভাবে ৬৪ জেলার সাংবাদিকদের সমন্বয়ে কৃষি ভিত্তিক অর্থনীতির ওপর গবেষনা ও সেমিনার করছেন। জনস্বাস্থ্য সচেতনতায় ফ্রি মেডিক্যাল ক্যম্প ও বিনামূল্যে রক্তদান কর্মসূচীর আয়ােজন করে থাকেন এই লেখক। শিক্ষার মানােন্নয়নে কর্ম :- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নতুনধারা ফাউন্ডেশনের ব্যানারে আন্তর্জাতিক শিক্ষা মেলা ও সেমিনার বহুবার আয়ােজন করছেন এই লেখক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ সময়ে ভাইস-চ্যান্সেলরের দ্বায়িত্বে থাকাকালে প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক সকল সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন। নারীর ক্ষমায়ন ও জেন্ডার সমতা :- প্রতিবছর নারী দিবস উপলক্ষে বিশেষ সেমিনার ও নারীর ইতিবাচক কর্মের জন্য পুরুস্কৃত করেন এই লেখকের সংগঠন নতুনধারা ফাউন্ডেশন। গনমাধ্যমের স্বাধীনতা ও জবাব্দ হিতা :- এই লেখক নতুনধারা ফাউন্ডেশনের ব্যানারে প্রতি বছরে একবার ৬৪ জেলার সাংবাদিকদের অংশগ্রহনের মাধ্যমে (সাংবাদিক উৎসব) প্রশিক্ষন ও তাদের ইতিবাচক প্রতিবেদনের জন্য পুরুষ্কার প্রদানের মাধ্যমে সাংবাদিকদের উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। ধর্ম ও সংস্কৃতি : - এই লেখক একটি অসম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের স্বপ্ন নিয়েই তার সংগঠন নতুনধারা ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। সেই সংস্থার ব্যানারে সকল ধর্ম বর্ণের মানুষ একত্রিত হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ে সংগীত বিভাগ ও নতুনধারা ফাউন্ডেশনের যৌথ আয়ােজনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল- “লালন দর্শন ও অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সেমিনার। সেমিনারটিতে দেশ বিদেশের নানা ধর্ম বর্ণের মানুষের অংশগ্রহন ছিলাে। বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজের প্রতিনিধি ছাড়াও বিশ্বের খ্যাতিমান লেখক কবি সাহিত্যিক ও গবেষক এবং শিক্ষাবিদগণ সেই সেমিনারে অংশ নিয়ে এই লেখকের প্রশংসা করছেন। অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মানের লক্ষে এই লেখকের এমন উলেখযােগ্য কর্ম অনেক। এই লেখক দৈনিক আজকের কাগজের বিশেষ প্রতিনিধি ও ঢাকা রিপােটার্স ইউনিটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ও রাজনৈতিক বিষয়ক খ্যাতিমান সাংবাদিক প্রয়াত মােস্তাক হােসেনের অসমাপ্ত আত্মজীবনীমূলক বই সাংবাদিক মােস্তাক হােসেন একটি যুগের প্রতীক লিখছেন। বইটির মােড়ক উম্মােচন করছেন বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বাংলাদেশের দক্ষিন পশ্চিমের জেলা বরগুনায় ১৯৮৮ খৃষ্টাব্দে এই লেখকের জন্ম।