ঋজু রেজওয়ান আজকের উঠোনে বসে লিখছেন আগামীকালের কবিতা। আগামীকাল যেমন অননুমেয় ঋজু রেজওয়ানের কবিতাও তাই। চিৎ/রীত পটাং ব্রিজিং থেকে পাঠককে ধরে নিয়ে পৌঁছে দেবেন মেরামত অযোগ্য অ্যাবস্ট্রাক্ট কিস-এ। সকাল যেমন করে দিবসের স্বভাব সম্পর্কে ইশারা দেয় ঋজু রেজওয়ানের কবিতাগুলিও তেমনি ইশারাখচিত। পাঠককে শুধু বুঝে উঠতে হবে নতুন ধরনের ডিকশন, সিনট্যাক্স, যতিচিহ্নাদির চলনবলন, গলন আর অতিগলন। বাংলা কবিতার ইশারা ইঙ্গিতের যে প্রচলের সাথে পাঠকের জানাশোনা ছিল এতকাল-- সেই মায়া ত্যাগ করে তা শিকেয় তুলে রেখে আসতে হবে ঋজু রেজওয়ানের কবিতা পাঠের সময়। কেননা ‘বিপ্রতীপতা (±) হাইটেক বাই ফোকাল’ হাতে নিয়ে বসলে নতুন ধরনের সাইন ল্যাংগুয়েজ দেখা যাবে-- যেখানে কবিতার প্রচল অলংকারগুলো নতুন করে গড়ে উঠেছে ঋজু রেজওয়ানীয় কায়দায়-- যার ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে আছে খণ্ড খণ্ড কবিতা, কবিতার ভেতর-- যেন ‘সব দৃশ্য! দৃশ্যত অদৃশ্য!’ ঋজু রেজওয়ান’র কবিতার স্বাদ আস্বাদন করতে হলে পাঠকের একটা প্রস্তুতি পর্ব সেরে আসতে হয়। আর এই প্রস্তুতির শুরুতেই চেনা জগতে পাঠককে তাঁর আত্মপরিচয় পুনঃনির্মাণ করে নিতে হয়। নইলে পাঠকের সামনে কবিতাগুলো নয়তো কবিতাগুলির সামনে পাঠক হোঁচট খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকবে। যদিও এই মুখ থুবড়ে পড়ার ঘটনাটি ঘটে গেলে চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে একেকটি চোখা কবিতাই, টুকরো টুকরো-- কাঁচের মতো সুতীক্ষ্ন ও স্বচ্ছ। তবু পাঠক ‘কবরের মতো শান্ত স্তন’, ‘জলীয় বাষ্প; বাষ্পের হৃদয়’ কিংবা ‘ফ্রেন্ড এনিমি = ফ্রেনেমি’র মতো নতুন ধরনের গয়নাগাটির সন্ধান পাবে বইটিতে। সন্ধান পাওয়া যাবে শব্দের ব্যবচ্ছেদ, কাটাকুটি আর ভাঙাচোরা-- ‘লাভুডুবু’, ‘ট্রায়াঙ্গুল’, ‘চবুতর’, ‘খলত’-- এরকম চমকপ্রদ সব শব্দ, মাথা ১৮০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে ফেলা নতুন নতুন শব্দ। নতুন হলেও এগুলো কবিতায় ব্যবহৃত অন্য সব শব্দেরই ‘আলতু-তালতো ভাই’। তাই অনায়াসে প্রবেশ্য। ঋজু রেজওয়ান’র কবিতা ‘আনলকস জিন্দেগী’ আমার কোনো সন্দেহ নেই। ফরিদ ছিফাতুল্লাহ