বাবার সন্ধানে কোমালা নামক এক মৃতদের গ্রামে এসেছে গল্পের নায়ক। কে জীবিত কে মৃত―এমন এক ধোঁয়াশার মধ্যে শুরু হয় হুয়ান রুলফোর পেদ্রো পারামো―লাতিন সাহিত্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী উপন্যাসের একটি। মার্কেসের মতো পৃথিবীখ্যাত লেখক তাঁর লেখালেখির প্রেরণা হিসেবে তুলে ধরেছেন এই উপন্যাসকে। তিনি বলেন, স্প্যানিশ ভাষায় লিখিত সব থেকে সুন্দর উপন্যাস হচ্ছে পেদ্রো পারামো। আমি যদি এমন একটি উপন্যাস লিখতে পারতাম তাহলে আর কলম ধরতাম না। বোর্হেসের মতে, পৃথিবীর যে-কোনো ভাষায় লিখিত শ্রেষ্ঠ উপন্যাসগুলোর একটি পেদ্রো পারামো। মার্কেসের মতো কার্লোস ফুয়েন্তেসও গুরু মানতেন রুলফোকে। তিনি উপন্যাসটি সম্পর্কে বলেন, ‘পেদ্রো পারামো আমাদের লাতিন আমেরিকার নতুন ধরনের উপন্যাসের পথ সৃষ্টি করে দিয়েছে।’ লাতিন সাহিত্যের আরেক খ্যাতিমান লেখক ওক্তাবিও পাস পেদ্রো পারামোকে নির্জনতার গোলকধাঁধা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। মারিও বার্গাস য়্যোসাও স্বীকার করেছেন তাঁর প্রজন্মের ওপর এই উপন্যাসের প্রভাবকে। শুধু লাতিন আমেরিকার লেখকদের নয়, গত ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বের অগণিত লেখক-পাঠককে বিমোহিত করে চলেছে উপন্যাসটি। ক্ষীনকায় এই উপন্যাসটি শুধু কাহিনির জন্য নয়, কাঠামোর জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। রুলফো উপন্যাসের ঐতিহ্য থেকে সরে এসে তাঁর আলোকচিত্রের শিল্পকে অনুসরণ করেছেন এই উপন্যাস রচনার ক্ষেত্রে। বিশ্বসাহিত্যে জাদুবাস্তবতার সবচেয়ে সফল প্রয়োগও ঘটেছে এই উপন্যাসে। বিশ্বখ্যাত এই উপন্যাসটি মূল থেকে অনুবাদ করেছেন লাতিন সাহিত্যের একনিষ্ঠ অনুবাদক আনিসুজ জামান।