ভালোবাসা- কখনো রংধনু, কখনো গোলক ধাঁধা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তৈয়েবুর রহমানের প্রথম কাব্যগ্ৰন্থ। এর আগে পেন্সিল পাবলিকেশনস থেকে তাঁর অনুবাদ গ্ৰন্থ 'দহন, দ্রোহ ও দর্শন: বিশ্বখ্যাত কবিদের নির্বাচিত শত কবিতা' প্রকাশিত হয়েছে এবং গ্ৰন্থটি সুধীমহলে সমাদৃত হয়েছে। তাঁর কবিতা লেখা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে শুরু হলে ও একাডেমিক পড়াশুনার চাপে আর এগোয় নি। কিন্তু কবিতা তাঁকে টেনেছে অহর্নিশ। তাঁর না বলা অনেক আনন্দ, বেদনা ও ভালোবাসা এই কাব্যেগ্ৰন্থের ছত্রে ছত্রে প্রতিফলিত হয়েছে। কবিতায় অনেক কিছু স্বল্প পরিসরে সুন্দরভাবে তুলে আনা যায়-এটা তিনি বিশ্বাস করেন। তিনি আরো বিশ্বাস করেন, কবিতা হৃদয় ও আত্মার খোরাক। কবিতা সমাজের ছবি আঁকে, কবিতা মানুষকে শান্তি ও স্বস্তি দেয়। এই গ্ৰন্থ তাঁর পঞ্চাশোর্ধ্ব পরিণত জীবনের অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ ও ভালোবাসা ও রোমান্টিকতায় সুবাসিত। সমাজ ও সংস্কৃতি ছাড়া প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন অসম্পূর্ণ-খানিকটা হৃদয় ও আত্মাবিহীন দেহের মতো। সামাজিক বিজ্ঞানের জলসিঞ্চন এ গ্ৰন্থের অনেক কবিতাকে বাঙময় ও ঋদ্ধ করেছে। বইটিতে নানান রঙের ও গন্ধের বিষয়বস্তুযুক্ত কবিতা সন্নিবেশিত হয়েছে। প্রেম-বিরহ, মানুষের ও প্রকৃতির সাথে সম্পর্ক, মা-বাবা, বন্ধুত্ব, মানুষ হত্যা বিরোধিতা, মাথা, মন, আত্মা, জল, বৃষ্টি, জোছনা, একাকীত্ব, শৈশব, নারী ক্ষমতায়ন ও করোনাসহ অসংখ্য বিষয় স্থান পেয়েছে। কবিতার মাধ্যমে কবি তাঁর স্বস্তির গন্ডি পেরিয়ে জনমানুষের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছেন, তাদের খুব কাছের একজন হয়ে। সমসাময়িক বাংলাদেশে কবিতার দূর্দশা এবং কবিদের আকাল তাঁকে ভীষণ ব্যথিত করে। কবির শ্রম ও সাধনা সার্থক হবে তখন, যখন পাঠক এই কাব্যগ্ৰন্থটি পাঠ করে আনন্দে বিহ্বল হবেন, ভালোবাসার নানান রঙে রঞ্জিত হবেন এবং ভালোবাসার সুগন্ধ ছড়াবেন অন্যদের মাঝে।