ত্রিশ লক্ষ শহীদের তাজা রক্ত ও দুই লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি লাল সবুজের এই বাংলাদেশ অর্জিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিপাগল জনতা যুদ্ধ করে পাক হায়েনাদের কাছ থেকে প্রাণের এই দেশকে ছিনিয়ে আনে। হাতে গোনা কিছু স্বাধীনতা বিরোধী ছাড়া দেশের বেশিরভাগ জনগণই স্বাধীনতার পক্ষে ছিল। স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করতে গিয়ে অনেক আঞ্চলিক বাহিনী গড়ে ওঠে। তাদের মধ্যে পলাশডাঙ্গা যুব শিবির অন্যতম। এটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও উত্তরবঙ্গের বৃহত্তম আঞ্চলিক গেরিলা বাহিনী। এই বাহিনী তৎকালীন সিরাজগঞ্জ মহকুমার কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট গ্রামে গড়ে ওঠে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের অর্ধ শতাব্দী পার হলেও এই বাহিনীর গড়ে ওঠার ইতিহাস সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য গবেষণা নেই বললেই চলে। পলাশডাঙ্গা যুব শিবিরের শুরুর ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে দেখা যায়, ১৯৭১ সালের স্থানীয় জনগণ যারা প্রত্যক্ষদর্শী ছিল, তারা বেশিরভাগই মারা গেছে। হাতে গোনা কিছু লোক জীবিত আছে। তাও আবার এতদিন পরে ঐ ঘটনার বর্ণনা শুনতে গিয়ে দেখা যায়, অনেকের স্মৃতিতেই তা পরিস্কার নয়, ভাসা ভাসা জ্ঞান রয়েছে। তাছাড়া জনগণের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে আলোচনার অভ্যাসও কম। অপরদিকে স্বাধীনতা বিরোধী ও তাদের আত্মীয়-স্বজনদের সমাজের প্রভাবের জন্য মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে অনেকইে অনাগ্রহ প্রকাশ করে। তারপরও কিছু লোকের অনুপ্রেরণাই এই লেখার ভিত্তি। বইটি লিখতে অনেকেই বিভিন্নভাবে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমান মাখন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ সরকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা সামছুল আলম সামছু (উল্লাপাড়া), বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান (তাড়াশ), বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল ইসলাম (মুক্তিযুদ্ধ গবেষক), সাংবাদিক ইমরান হোসাইন, বন্ধু- ৯৮ ব্যাচ, তপন বসাক, তিথি মিত্র, স্বাগতম কুমার বসাকসহ আরও অনেকে। আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের কাছে ঋণী। পরিশেষে বইটিতে ভুলত্রুটি থাকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার বিনীত অনুরোধ রইল।
Title
জনসাধারণের স্মৃতিতে পলাশডাঙ্গা যুব শিবির- ভদ্রঘাট যুদ্ধ পর্ব