১৯৭১ সালের ৩০ আগস্ট থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকাশিত ‘সাপ্তাহিক জন্মভূমি’পত্রিকার প্রতিলিপি সংস্করণ। স্বাধীনতার জন্য লড়াই-সংগ্রামে সংবাদপত্র এবং সাংবাদিকসমাজ ছিলেন অকুতোভয়। অগ্নিগর্ভ একাত্তরে গণমাধ্যম রেখেছে দেশপ্রেমের সমুজ্জ্বল ভূমিকা। রক্তচক্ষু, জেল-গারদ, জুলুম-নির্যাতন সবরকম নিগ্রহের শিকার হয়েও সাংবাদিকসমাজ বিচ্যুত হননি। মুক্তিকামী বাংলার মানুষের আবেগ এবং স্বপ্নের সঙ্গে একাকার হয়ে তাঁরা লিখেছেন সংবাদ, সম্পাদকীয়, উপসম্পাদকীয়। মোস্তাফা আল্লামা ছিলেন এই সাংবাদিকদের একজন। তিনি অস্ত্রহাতে যুদ্ধেও অংশগ্রহণ করেছেন। সম্পাদনা করছেন সাপ্তাহিক জন্মভূমি। মুক্তাঙ্গন থেকে প্রকাশিত হয়েছে সাপ্তাহিক জন্মভূমি। পত্রিকাটি ছিল মুক্তিযুদ্ধকালে প্রকাশিত শীর্ষস্থানীয় একটি সংবাদপত্র। প্রায় অর্ধ লক্ষ কপি প্রকাশিত হয়েছে এর প্রতিটি সংখ্যা। জন্মভূমির প্রতিটি সংখ্যায় মুক্তিযুদ্ধের নানা ঘটনার অনপুঙ্খ চিত্র উঠে এসেছে। মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহতার প্রামাণ্য এক দলিল এই জন্মভূমি। যে-সব দলিল-দস্তাবেজ মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ সাক্ষী হিসেবে স্বীকৃত হবে, জন্মভূমি তার অন্যতম। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে আগ্রহী পাঠক এবং গবেষককে সাপ্তাহিক জন্মভূমির এই প্রতিলিপি সংস্করণ মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলি কীভাবে অতীত হয়েছিল তার একটি প্রত্যক্ষ ধারণা দেবে।
মোস্তফা সেলিম লুপ্ত বর্ণমালা সিলেটি নাগরীলিপি ও সাহিত্য গবেষণা, প্রকাশনা এবং তার নবজাগরণে অনন্য ভূমিকা রেখে দেশে-বিদেশে নন্দিত। তাঁর কাজের মূল্যায়ন করে ‘মোস্তফা সেলিমের নাগরিপ্রেম’ শিরোনামে দৈনিক প্রথম আলো শনিবারের বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করে ১২ ডিসেম্বর ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে এবং The Daily Star প্রকাশ করে "Keeping an almost extinct script alive, a publisher's story" প্রতিবেদন। দেশে-বিদেশে এ বিষয়ে আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে তিনি অংশগ্রহণ করেছেন। তাঁর প্রথম গ্রন্থ মুক্তিযুদ্ধে বড়লেখা প্রকাশিত হয় ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে। তিনি বাংলাপিডিয়া, লিবারেশনওয়ার পিডিয়াসহ বিভিন্ন গবেষণা প্রকল্পে কাজ করেছেন। নাগরীলিপির ২৫টি পুথি সম্পাদনা তাঁর উল্লেখযোগ্য কাজ। সম্পাদনা করেন মাসিক ভ্রমণচিত্র। মোস্তফা সেলিমের জন্ম মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখায়। তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর।