আইনজীবী ম্যালকম রসের বাড়িতে শেষরাতে এক সংবাদ বাহক এসে খবর দেয় যে তাঁর পরিচিতা, মিস মার্গারেট ট্রেলাউনির ভীষণ বিপদ। তড়িঘড়ি সেখানে গিয়ে মিস্টার রা জানতে পারেন সি ট্রেলাউনির বাবাকে মধ্যরাতে নিজের ঘরে অচৈতন্য ও রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। অনুসন্ধানের জন্য পুলিশ ও গোয়েন্দা উভয়েই আসেন। চিকিত্সার প্রয়োজনে আসেন এক তরুণ কিন্তু উৎসাহী ডাকার। কিন্তু দিন তিনেক হুঁশ ফেরে না মিস্টার ট্রেলাউনির তাঁর ঘর থেকে পাওয়া যায় এক চিরকুট, তাতে ছিল এক বিশেষ নির্দেশ। সেই নির্দেশ অনুসারে কাজ করতে গিয়ে নানান অলৌকিক ও অতিলৌকিক ঘটনার সম্মুখীন হন বাড়িত সকলে। অবশেষে জ্ঞান ফেরে তাঁর কিন্তু ঘনিয়ে আসে আরেক রহস্য। মিস্টার ট্রেলাউনি সকলকে জানান, তিনি জানে তাঁর এই দীর্ঘ অচৈতন্য থাকার আসল রহস্য কী। প্রাচীন মিশর ও সেখানকার ঐতিহ্য, কালোজাদু এবং তন্ত্র-মন্ত্রের সাথে জড়িয়ে পড়েন উপন্যাসের চরিত্রেরা। এই উপন্যাস ব্রাম স্টোকারের সৃষ্ট এক অনবদ আখ্যান। এখানে প্রেম, রহস্য, প্রাচীন রীতিনীতি, বিজ্ঞান ও সর্বোপরি অতিলৌকিকতার যে পর্দা লেখক সুনিপুণ কৌশলে বুনেছেন, তার আস্তরণ সরাতে সরাতে পাঠক পৌঁছে যাবেন এক প্রাচীন লোকে, শিউরে উঠবেন, রোমাঞ্চিত হবেন এবং আত্মাদন করবেন অদ্ভুত এক গথিক বর্ণনার ।।
ব্রাম স্টোকার পুরাে নাম আব্রহাম ব্রাম স্টোকার। আইরিশ এই উপন্যাসিক ও গল্পকার গােটা পৃথিবীর কাছে বিখ্যাত। ড্রাকুলা'র লেখক হিসাবে। জন্ম ১৮৪৭ সালের ৮ই নভেম্বর আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে।। ছােটোবেলায় দীর্ঘকাল কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে। শয্যাশায়ী ছিলেন। মায়ের কাছে নানান রূপকথা আর কিংবদন্তি শুনে মূলত ভৌতিক সাহিত্যে আগ্রহ জাগে। তার। ১৮৭৫ সালে প্রকাশিত হয় উনার প্রথম উপন্যাস। ‘দ্য প্রিমরােজ প্যাথ'। পঞ্চদশ শতকের ওয়ালাচিয়ার। আলােচিত-সমালােচিত রাজকুমার ভাদ তেপস। ড্রাকুলা বা ভাদ দ্য ইম্পেলারকে নিয়ে যুবক বয়স। থেকেই প্রচণ্ড আগ্রহ ছিল তার। জে. সারিভন লে। ফানুর ‘কামিলা' পড়ে সর্বপ্রথম ভ্যাম্পায়ার ফিকশন। লেখার ইচ্ছা জাগে তার মনে।। ১৮৯৭ সালে প্রকাশিত হয় উনার সবচেয়ে বিখ্যাত উপন্যাস 'ড্রাকুলা' যেখানকার প্রধান চরিত্রটিকে তিনি। গড়ে তুলেছিলেন ভাদ দ্য ইম্পেলারের অনুকরণে। যদিও শুরুতে বইটি তেমন সাড়া ফেলেনি। ব্রামের মৃত্যুর কিছু বছর পর এই গ্রন্থটির জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে এবং একসময় বিশেষজ্ঞরা এটিকে কালজয়ী। গ্রন্থ হিসাবে মেনে নেন। অতিপ্রাকৃত সাহিত্যেও সবচেয়ে বিখ্যাত বই এটিই। প্রায় এক ডজন বইয়ের লেখক তিনি, তবে ড্রাকুলার। আকাশছােয়া জনপ্রিয়তার কারণে সেগুলাে নিয়ে আর। তেমন আলোচনা হয় না। তবে উনার ‘দ্য লেডি অফ। দ্য শ্রাউড', 'দ্য মিস্ট্রি অফ দ্য সি’, ‘দ্য স্নেকস পাস বইগুলাে কাল্ট ক্লাসিকের মর্যাদা পেয়েছে। এছাড়া ‘দ্য জুয়েল অফ সেভেন স্টারস’ আর ‘দ্য লেয়ার অফ। দ্য হােয়াইট ওয়ার্ম' উপন্যাস দুটিও পঞ্চাশের দশকের। পর মোটামুটি জনপ্রিয়তা পায়।। ১৯১২ সালের ২০শে এপ্রিল ইংল্যান্ডের লন্ডন শহরে। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান হরর সাহিত্যের এই মহান লেখক।