রবীন্দ্রোত্তর আধুনিক বাংলা কবিতায় অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রতিভা জীবনানন্দ দাশ। তিনি কেবল কবিতা রচনা করেননি, সম্প্রতি আবিষ্কৃত হয়েছে তাঁর কথাসাহিত্যের বিপুল সম্ভার। তদুপরি অন্তর্চৈতন্যের স্নিগ্ধ আলোর সম্পাতে ব্যক্ত করেছেন কবিতাবিষয়ক নিজস্ব ভাবনার নানান অনুষঙ্গ। কবিতার কথা তাঁর কবিতাবোধের গদ্যকথন। কবিতা কী, কেন, কবি কে ইত্যাদি প্রসঙ্গ ইতিহাস ও সাম্প্রতিকতা, দর্শন, আধুনিকতা ও ধ্রæপদি; ভাষা ও প্রতীকায়ন, প্রাচ্য ও প্রতীচ্য; বিজ্ঞান প্রভৃতি অনুষঙ্গের সঞ্চরণে প্রবন্ধগুলোতে তিনি উন্মোচন করেছেন কবিতাবিষয়ক তাঁর চিন্তা। এর বাইরে বিভিন্ন সময় তিনি লিখেছেন রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে সমকালীন কবি-সাহিত্যিকদের নিয়ে প্রবন্ধ। লিখেছেন ভাষা ও শিক্ষা বিষয়ে। তা ছাড়া চিঠিপত্র; কাব্যগ্রন্থের ভূমিকা; আত্মচরিতমূলক রচনাসমূহে তাঁর কাব্যচিন্তার প্রকাশ ঘটেছে। কবিতার কথা প্রবন্ধ-গ্রন্থটি বহুল পঠিত হলেও জীবনানন্দের অনেক রচনাই পাঠকের দৃষ্টির আড়ালে ছিল। জীবনানন্দ-গবেষক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী কবির সেসব গদ্য রচনার যে নির্বাচিত সংকলন করেছেন, তা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের। এসব প্রবন্ধ-চিঠিপত্রে জীবনানন্দ-মানস উপলব্ধি করা যায়। সংকলনটির পরিশিষ্টাংশে কবির পরিচিতি সংযোজিত হয়েছে, এটিও তথ্যসমৃদ্ধ এবং সুচিন্তিত। বাংলাদেশে জীবনানন্দ-চর্চায় কবির শ্রেষ্ঠ প্রবন্ধের এই সংগ্রহটি নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ কাজ
জন্ম: ৩ জুন, ১৯৫৯, বাংলাদেশের অন্যতম অর্থনীতিবিদ ও সাহিত্যিক। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়াও, তিনি অর্থনীতি, ব্যবস্থাপনা ও অপারেশানস্ও বিজনেস রিসার্চ ইত্যাদি বিষয়ের অধ্যাপক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ১৯৮১ স্নাতক ও ১৯৮৩ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে ১৯৯২ সালে অস্ট্রেলিয়ার মনাশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেন এবং ১৯৯৭ সালে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সে অধ্যয়ন করেছেন। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার ডিকিন বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি কিছু সময়ের জন্য পাবলিক পলিসি অধ্যয়ন করেন। তিনি ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে (বিসিএস ১৯৮২ ব্যাচ) যোগ দেন। অতঃপর সরকারের কর্মকর্তা হিসেবে তিনি দেশে-বিদেশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে কাজ করেছেন। একই সঙ্গে বিশ্বব্যাংক ও আংকটাডের পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৩ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত তিনি কূটনৈতিক পদে বেলজিয়াম, সুইজারল্যাণ্ড ও লুক্সেমবুর্গ এ দায়িত্ব পাল করেছেন। ২০১৪ সাল থেকে অদ্যাবধি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় কার্যরত রয়েছেন। সাহিত্য গবেষণা তাঁর প্রিয় ক্ষেত্র। তিনি জীবনানন্দ দাশের কবিতা ও অন্যান্য রচনা নিয়ে প্রায় তিন দশক যাবৎ গবেষণা করে চলেছেন। জীবনানন্দ দাশের কবিতা ইংরেজিতে অনুবাদ এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেয়ার ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছেন। তিনি জীবনানন্দ দাশের স্বহস্তে লিখিত পাণ্ডুলিপির ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থের সঠিক পাঠ নিরূপণ করেছেন। বিশেষ করে রূপসী বাংলা কাব্যগ্রন্থের বর্জিত অংশ পুনরূদ্ধার করেছেন ও সম্পাদক কর্তৃক সংযোজিত শব্দাবলী বর্জন করে বিশুদ্ধ পাঠ তৈরী করেছেন। ২০১৪ সালে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর গবেষণা প্রতিবেদন ‘চটি সাহিত্যের পূর্ব পশ্চিম’। বর্তমানে তিনি বাংলা সাহিত্যের অভিধানে অসংকলিত শব্দ নিয়ে গবেষণা করছেন।